মাহমুদুন্নবী, পত্নীতলা (প্রতিনিধি) নওগাঁ: পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর এলাকার দিনমজুর রফিকুল ইসলাম। প্রতিনিয়ত তাঁর বউ বলে বাজার আনো কিন্তু সে বলে কেমনে আনবে। সব জিনিসে আগুন লেগেছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কেজিতে বেড়েছে ১৫-২০ টাকা। নিরুপায় হয়ে পড়েছেন হাজারো রফিকুল ইসলাম।

রিপোর্টারের সাথে কথা হয় দিনমুজর রফিকুল ইসলামের। রফিকুল ইসলাম বলেন, “সামান্য রোজগারের টাকা দিয়ে কিভাবে উর্দ্ধগামী বাজার থেকে বাজার-সদা করবো। যেখানে ভোগ্য তেল সোয়াবিনের লিটার প্রায় ২০০ টাকা, সরিশার তেল ২০০ টাকা লিটার, কাঁচা মরিচ লাফ দিয়ে ২২০ টাকা কেজি, ডিম মেরেছে হাফ সেঞ্চুরী, বয়লার মুরগী ডাবল সেঞ্চুরী। তাহলে বাজার করবো কিভাবে আর খাবো কিভাবে?”

পড়তে পারেন: বাড়ছে ভারতীয় পেঁয়াজ, আদা-রসুনের দাম

শুধু রফিকুল ইসলামই নয়, পুরো দেশের বাজারে নিত্যপ্রেয়োজনীয় পণ্যে আগুন। তবে এই আগুন অন্য রকম। অন্যান্য সময় পুরো বাজারে আগুন লাগেনা। পণ্য ধরে ধরে আগুন লাগানো হয়। কখনো পেঁয়াজে আগুন লাগানো হয় আবার কখনো নিরীহ লবণে, আর ভোজ্যতেলে তো প্রায়ই আগুন লাগে। কিন্তু এবারে আগুন লেগেছে নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব জিনিসপত্রে।

জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর পত্নীতলার বাজারগুলোতে সব ধরণের নিত্যপণ্যেও দাম বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা করে বেড়েছে বিভিন্ন শাক- সবজির দাম। শুধু শাক – সবজির দাম নয় ছ-ছ করে সব বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। এত চিন্তায় পড়েছে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত পরিবার।

সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে পটোল, কাঁচা পেঁপে, ঝিঙ্গেসহ বেশ কিছু পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহন খরচও অনেক বেড়ে গেছে। একারণে সরবরাহ বাড়ার পরেও সবজির দাম কমার বদলে উল্টো বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে করলা, বেগুন, বরবটি,শসা, কাঁচা পেঁপে, পটোল, ঝিঙেসহ প্রায় সব ধরণের সবজি।

পড়তে পারেন:  মাছের কেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকা

বরবটি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, শসার কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, কাঁকড়োল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, কাঁচা পেঁপের কেজি ২৫ থেকে ৩৫ টাকা যা আগে ছিলো ২০ থেকে ২৫ টাকা, পটোলের দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, করোলার দাম ছিলো ৪০ থেকে ৫০ টাকা যা কৃদ্ধি পেয়ে এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, কঢ়ুর লতি, ঝিঙে ও চিচিঙ্গার বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে যা আগে ছিলো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ২২০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ টাকা আর আদা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজিতে।

এদিকে পাইকারী ও খুচরা বাজারে চিকন ও মোটা চালে প্রতি কেজি ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে। খুচরা বাজারে স্বর্লা চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়ে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা এক সপ্তাহ আগে ছিলো ৪৯ থেকে ৫০ টাকা, বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা, মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকায়।

ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। জিনিসপত্রের দাম অসহনীয় হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের পক্ষে সংসার চালানো খুব কঠিন হয়ে যাবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ