ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: সুস্বাদু আমের জেলা মেহেরপুরে বারমাসি আমের চাষ শুরু হয়েছে বেশ আগে থেকেই। জেলার হিমসাগর, ল্যাংড়া, বোম্বাই আম সারাদেশে পরিচিত। এবার জেলায় নতুন জাতের বারমাসি ‘কাটিমন’ আমের চাষ শুরু হয়েছে। এসব আম ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ইউটিউব দেখে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের সমাজকর্মী মঈন-উল-আলম ওরফে বুলবুল কাটিমন আমের চাষ শুরু করেন। ২০২১ সালে আমঝুপি বিএডিসি বীজ উৎপাদন খামারের পাশেই ২৪০টি আম গাছের বাগান গড়েন। সেসব গাছে এখন মুকুল আর ডালে ডালে ঝুলছে থোকা থোকা আম।

বাগানের গাছের আম কোনটি পরিপক্ক হয়েছে। কোনটি গুটি , আবার কোন ডালে মুকুল। পরিপক্ক আমের রং দেখলেই জিভে পানি আসবে। অসময়ের এ আমচাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে সারাবছরই আমের স্বাদ পাবে মানুষ। তখন বছরজুড়ে হবে আমের মৌসুম।

কৃষিবিদরা আশা করছেন- আগামী একদশকে এ আম দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে। আমচাষি মঈন-উল-আলম ওরফে বুলবুল জানান, তার বাগানের আম দেখতে এখন প্রতিদিনই আসছে জেলার বিভিন্ন গ্রামের উৎসাহী মানুষ।

এ সময় অন্য জাতের আম গাছে মুকুল বা আম না থাকলেও তার গাছে আম ধরছে থোকায় থোকায়। আম পাড়তে না পাড়তেই আবারো গাছে আসছে মুকুল। গাছগুলোর এ বৈশিষ্ট্য স্থায়ী হলে দেশে আম উৎপাদনে বিপ্লব ঘটবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

পুঠিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কাটিমন আম

৮ দেশে যাবে নওগাঁর আম

মিশ্র ফল চাষে ভাগ্য ফিরেছে ইঞ্জিনিয়ার তুষারের

নতুন সম্ভাবনা বারমাসি পিংক জাতের কাঁঠাল

এ আম গাছকে বারমাসি আমগাছ বলে বর্ণনা করেছেন স্থানীয় আমচাষিরা। আমগুলোর ওজন ১ মাসেই ৩শ গ্রাম পর্যন্ত। আটি ছোট এবং আঁশবিহীন। এ আম খেতে অনেকটা হিমসাগর আমের মতো।

সরেজমিনে মঈন-উল-আলম ওরফে বুলবুল এর আম বাগান ঘুরে একই গাছে কোনটি পরিপক্ক, কোনটি কাঁচা আবার কোন ডালে দেখা যাচ্ছে মুকুল। চলতি মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকার আম বাজারজাত হয়েছে জানান বুলবুল। প্রতি কেজি আম পাইকারি ২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। আরও ২০-২৫ মণ আম বিক্রি হবে বলে আশা করছেন।

বুলবুলের বাগানে বরোমাসি আমচাষে সফলতা দেখে আমঝুপি গ্রামের রফিকুল আলমও উৎসাহী হয়েছেন এ আমচাষে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে তিনবিঘা জমি তৈরি করছেন আমের বাগান গড়তে। বুলবুলের সাথে চুক্তিবদ্ধও হয়েছেন আমের কলম নেবার জন্য।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানান, ইউটিউবে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে ২ বিঘা জমিতে কাটিমন জাতের হাইব্রিড থাই বারোমাসি আম চাষে সাফল্য দেখিয়েছেন বুলবুল।

এ প্রসঙ্গে সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নাসরিন পারভিন জানান, এটি গবেষণার মাধ্যমে চাষি পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী এক দশকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে সারাবছর আম পাওয়া যাবে। আমটি সুস্বাদু এবং বারোমাসে তিনবার আম পাওয়াতে মানুষ উদ্বুদ্ধ হচ্ছে এ বারোমাসি আমচাষে। বারমাসি আম মিলছে সারাবছর, কেজি ২০০ টাকা শিরোনামে সংবাদের তথ্য বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ