আরিফুল ইসলাম, নাটোর প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বাজারে যখন দুইশত টাকার নিচে কেনা যায় না কমলা ও মাল্টা। ঠিক এমন সময়ে বাগানে আসলেই বিনামূল্যে রসে ভরা ফল খাওয়াচ্ছেন কৃষি উদ্যোক্তা আজিজুর রহমান। প্রায় দুই মাস ধরে নাটোরের এ কৃষি উদ্যোক্তা দর্শনার্থীদের বিনামূল্যে সুস্বাদু কমলা ও মাল্টা খাওয়াচ্ছেন। প্রতিদিনই ভিড় জমিয়ে তার বাগানে গিয়ে কমলা ও মাল্টা খাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

পাহাড়ের সুমিষ্ট চায়না, দার্জিলিং কমলা উৎপাদিত হয়েছে নাটোর সদর উপজেলার ড্রিম এগ্রো ফার্ম ও নার্সারিতে। দুই বছরে ভালো ফলন পাওয়ায় বিক্রি না করে সবাইকে ফ্রিতে কমলা খাওয়াচ্ছেন তরুণ উদ্যোক্তা মো. আজিজুর রহমান। কমলা চাষের কারণে নার্সারি মালিক আজিজুল এখন ‘কমলা আজিজুল’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন

আজিজুজের ড্রিম এগ্রো ফার্ম ও নার্সারীতে নাগপুরি কমলা, চায়না থ্রি কমলা, দার্জেলিং কমলা, পাকিস্তানি কমলা, মিশরীয় মাল্টা, ইন্ডিয়ান মেন্ডারিনসহ নয়টি জাতের কমলা ও মাল্টা রয়েছে। কমলা ও মাল্টার প্রায় ৩০০ চারা ভারত থেকে নিয়ে এসে বাগানে রোপন করেছেন তিনি। পরিচর্যার পর ৩ বছরের মাথায় গাছে কমলা ধরে। এ কমলা অবিকল চায়না কমলার মত দেখতে।

আজিজুল রহমান জানান, বাবার সহযোগিতায় এই মিশ্র বাগান করি। বাণিজ্যিকভাবে বাগান গড়ার জন্য ১৫ হাজার কলম চারা বাঁধেন। এ বছর প্রতিটি গাছে গড়ে ৪৫-৫০ কেজি করে কমলা ধরেছে। গাছে থোকায়-থোকায় ঝুলছে কেবল কমলা আর কমলা। আজিজুল রহমানের কমলা বাগানের এ খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার পর কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মিডিয়া কর্মী, আগ্রহী চাষি ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভিড় কমলা বাগানে লেগেই আছে।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

দেশে চাষ হচ্ছে ভারতের সাদকি কমলা, বাগানেই বিক্রি

চায়না-থ্রী কমলা চাষে প্রবাস ফেরত আলমগীরের সাফল্য

দার্জিলিং কমলা চাষে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মাজাহারুল

জনপ্রিয় হচ্ছে বারি-২ কমলা

আজিজুল রহমান আরও জানান, কমলা চাষে খরচ অত্যন্ত কম। এ বছর তিনি ৪ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। দর্শনার্থীদের দেখার জন্য কমলা গাছেই রেখে দিয়েছেন। খেতে দিচ্ছেন কমলা। দর্শনার্থী দের কমলা দেখে কেউ বাগান থেকে খালি মুখে ফিরছেন না। সবাই কমলা স্বাদ গ্রহণ করছেন। এতে তারা খুশি হয়ে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন কমলার চারা। অনেকেই বাগান তৈরির জন্য দিচ্ছেন চারার অর্ডার।

আজিজুল রহমান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘কেবল পাহাড় নয়; প্রযুক্তি ব্যবহার করে সমতল জমিতেও সুমিষ্ট কমলার চাষ সম্ভব। বিদেশ থেকে কমলা আমদানির দিন শেষ হতে চলেছে। বাণিজ্যিকভাবে বাগান করলে দেশীয় কমলা দিয়ে বাৎসরিক চাহিদা মেটানো সম্ভব।’

‘কৃষি বিভাগ থেকে আজিজুল রহমান কে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। আগ্রহী কমলা চাষিদের এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ।