নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে মসলাজাতীয় পণ্য রসুনের কেজি বিক্রি হয়েছে গড়ে ৫৫-৭০ টাকা। মাস শেষ না হতেই একই রসুনের কেজি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। একলাফে দ্বিগুণ দাম হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশীয় বাজারে চাহিদা বাড়ায় পণ্যটি আমদানি বেড়েছে বলে জানান বন্দরসংশ্লিষ্টরা। গত এক মাসের ব্যবধানে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর অন্তত ৩০০ টন রসুন আমদানি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ বাজার, কাওরান বাজার, বাদামতলী বাজার, সূত্রাপুর বাজার,শ্যাম বাজার, কচুক্ষেত বাজার, মৌলভী বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে পাইকারিতে আমদানি করা রসুন ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে এরচেয়ে বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে সাধারণ জনগণের। অথচ মাসের শুরুতে বেশিরভাগ মসলাপণ্যের দাম কম ছিল। এসব তথ্য জানিয়েছে ট্রেডিং কর্পোরেশন বাংলাদেশ (টিসিবি)।

পড়তে পারেন: ভারতীয় রসুনে সয়লাব, আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা

চলতি তথ্যে ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব বিভাগ জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে এ বন্দর দিয়ে রসুন আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৬৩ টন। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৮৭৭ এবং আগস্টে ১ হাজার ১৮৬ টন। যার আমদানি মূল্য ২৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। যেখান থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ফলে গত এক মাসের ব্যবধানে পণ্যটি আমদানি বেড়েছে ৩০৯ টন। তবে গেল অর্থবছরের একই সময় রসুন আমদানি বন্ধ ছিল।

দেশে মসলাপণ্য আমদানি বাড়ার কারণ জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুল ইসলাম  জানান, রসুন লাভজনক ফসল হলেও সাতক্ষীরায় পণ্যটি উৎপাদনে কৃষক তেমন আগ্রহ দেখান না। ফলে আমদানির মাধ্যমে চাহিদা পূরণ করতে হয়। চলতি মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ৫০০ টন রসুন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সাতক্ষীরা সদরসহ সাতটি উপজেলায় ৫০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে রসুন।

পড়তে পারেন: দেশী রসুন ৭০, ভারতীয় ১১০ টাকা

দেশের উত্তরাঞ্চলের নাটোরের চলনবিল এলাকায় রসুন চাষ হয়। সেখানকার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর কাদায় রসুন চাষ করেন সেখানকার চাষিরা। দামে বেশ ভালো লাভ হয়। কিন্তু দেশীয় জাতের রসুন নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারনে বাজারে চাহিদা কম ও দাম কম হয়। এই সুবাদে চায়না ও ভারতীয় রসুন দেশের বাজার দখল করেছে।

ভোমরা স্থলবন্দরের মসলাপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান এন্টারপ্রাইজ জানান, গত এক মাসের ব্যবধানে প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছে আমদানি। গত জুলাই মাসে সপ্তাহে ২০-২২ ট্রাক রসুন আমদানি হয়েছে তার প্রতিষ্ঠানে। অন্যদিকে গেল আগস্টে সপ্তাহে ২৫-২৬ ট্রাক আমদানি হয়।

ভোমরা শুল্ক স্টেশন কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার নেয়ামুল হাসান জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রসুন আমদানি বেড়েছে। পণ্যটি আমদানিতে সরকারের উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আয় হয়েছে। গত দুই মাসে ১ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় হয়েছে রসুন আমদানি থেকে।

এ্রগ্রিকেয়ার/এমএইচ