নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আসা ২০০ টন গমে পচন ধরছে। ফলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বন্দরে এই গম পড়ে আছে। বাছাই করা গম নতুন করে বস্তায় ঢুকিয়ে বন্দর থেকে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভারত থেকে পঁচা গম এসেছে কিনা, এমন কথা নাকচ করে দিয়েছেন আমদানি সংশ্লিষ্টরা। তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশের আসার পর ভিজে এসব গম পঁচে গেছে। তবে বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেষ দিকে আসা গম ভারত থেকেই পঁচা অবস্থায় আসে। এখন এসব গম থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

পড়তে পারেন: গম আমদানিতে বিশ্বের শীর্ষ দেশ মিসর ভারতের দ্বারস্থ

স্থলবন্দরের পরিদর্শক (ট্রাফিক) মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘আখাউড়া বন্দরে আসার পর এসব গম বৃষ্টিতে ভিজেনি। আনার আগে হয়তো এমনটি হয়ে থাকতে পারে। তবে আমি যতটুকু জানি শেষের দিকে আসা গম পঁচা ছিলো।’

আরেকটি সূত্র জানায়, ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যের আগরতলার সঙ্গে আসামের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেই গমের এ দুর্গতি। মূলত নির্ধারিত সময়ে গম আসতে না পারা ও সেখানে বৃষ্টিতে ভেজাসহ নানা কারণে গম পঁচে যায়।

গমের আমদানিকারনক এস আলম গ্রুপের প্রতিনিধি মো. জিহাদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আখাউড়া স্থলবন্দরে আমদানি করা দু’শ মেট্রিক টনের উপর গম রয়েছে, যা মে মাসের শেষ সপ্তাহে আনা হয়। গম আনার পর ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পারায় বৃষ্টিতে ভিজে গম পঁচে যায়। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে গম শিগগিরই নিয়ে যাওয়া হবে। ৮-১০টি ট্রাকে করে এসব গম নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

পড়তে পারেন: বাঘায় নতুন জাতের গম চাষ, বিঘায় ফলন হয়েছে ১৮ মণ

প্রায় একই দাবি করেন, গম আনার সিএন্ডএফ এজেন্ট আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর স্বত্বাধিকারি মো. আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিতে ভিজে কিছু গমে পঁচন ধরেছে। শিগগিরই গমগুলো নিয়ে যাওয়া হবে।’

বাংলাদেশে যে পরিমাণ গম উৎপাদন হয় তা দিয়ে দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। তাই বাড়তি গম বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে। গত ৯ মাসে ভারত থেকে ১৩’শ কোটি টাকার গম আমদানি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।

কয়েক মাসে ব্যাপক হারে গম আমদানি বেড়েছে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে। আমদানি বাড়ার কারণে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি বেড়েছে পাঁচ গুণ।

পড়তে পারেন: এক দশকের সর্বোচ্চ দামে ভুট্টা, বেড়েছে গমের দাম

ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে জানা গেছে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে, অর্থাৎ জুলাই-মার্চ পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে গম আমদানি হয়েছে ৪ লাখ ৭১ হাজার ১৫০ টন। আমদানীকৃত এসব গমের মূল্য ১ হাজার ৩০৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ পর্যন্ত গম আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৪৮৮ টন, যার মূল্য ২৮৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ