পেঁয়াজের ঊর্ধমুখি দামে আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত এক সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের লাসালগাঁওয়ের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম অন্তত ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার জের ধরে সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় ভারতের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এর প্রভাব পড়তে পারে দেশটি থেকে পেঁয়াজ রফতানিতেও। খবর ইকোনমিক টাইমস ও ফ্রেশপ্লাজা।

মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার লাসালগাঁওয়ে এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম পেঁয়াজ বিপণন কেন্দ্রের অবস্থান। এখানে নিলামে বিক্রির পর সেসব পেঁয়াজ পুরো ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি রফতানি হওয়া পেঁয়াজের সিংহভাগ নাসিক থেকে যায়। এ কারণে স্থানীয় পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দামে ওঠা-নামা শুধু ভারতে নয়, বরং ভারতীয় পেঁয়াজের রফতানি বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।

আরও পড়ুন: নিয়মিত খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

নাসিকে পেঁয়াজের নিলাম আয়োজন করে লাসালগাঁও এগ্রিকালচারাল প্রডিউসড মার্কেট কমিটি (এপিএমসি)। সংগঠনটি জানিয়েছে, গত ২৪ আগস্ট এখানকার পাইকারি বাজারে রফতানিযোগ্য প্রতি কুইন্টাল পেঁয়াজ ১ হাজার ২০০ রুপিতে (ভারতীয় মুদ্রা) বেচাকেনা হয়েছিল। গতকাল লাসালগাঁওয়ে প্রতি কুইন্টাল পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬০০ রুপিতে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে স্থানীয় পাইকারি বাজারে রফতানিযোগ্য পেঁয়াজের দাম ৩৩ শতাংশ বা কুইন্টালপ্রতি ৪০০ রুপি বেড়েছে।

এপিএমসির একজন কর্মকর্তা জানান, লাসালগাঁওয়ে সাধারণত লট দরে পেঁয়াজ বেচাকেনা হয়। এখানকার পাইকারি বাজারে প্রতিদিন অন্তত ১৫ হাজার লট (প্রতি লটে ১০০ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রির জন্য আসে। তবে কিছুদিন ধরে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে এসেছে। এখন প্রতিদিন ৫-৮ হাজার লট পেঁয়াজ বাজারে আসছে। তাই বলা যায়, লাসালগাঁওয়ের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ অর্ধেকে নেমেছে।

পেঁয়াজের সরবরাহ কমে আসার পেছনে বৈরী আবহাওয়াকে দায়ী করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। অবিরাম বৃষ্টির কারণে এরই মধ্যে পেঁয়াজ উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। অনেক পেঁয়াজ ক্ষেতে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক চাষী আগাম পণ্য ঘরে তুললেও বৃষ্টির কারণে বাজারে সরবরাহ করতে পারছেন না।

আগাম সংগ্রহ করা পেঁয়াজের মানও তুলনামূলক নিম্ন। এসব কারণে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ সংকট তৈরি হয়ে বাড়তে শুরু করেছে দাম।

এপিএমসি জানিয়েছে, প্রতিদিন সরবরাহ হওয়া ৫-৮ হাজার কুইন্টাল পেঁয়াজ পর্যাপ্ত নয়। এতে অব্যন্তরীণ চাহিদা সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তার ওপর রয়েছে ক্রমবর্ধমান রফতানির চাহিদা। তাই সরবরাহ দ্রুত বাড়ানো সম্ভব না হলে পেঁয়াজের সরবরাহ সংকট আরো বাড়তে পারে। ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ রফতানিতে লাগাম টানতে বাধ্য হবেন।

তবে চলতি বছরের অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে খরিফ মৌসুমে উৎপাদিত পেঁয়াজ বাজারে আসতে পারে। ওই সময় পণ্যটির সরবরাহ বাড়বে। কমে আসতে পারে দাম। তবে পুরোটাই নির্ভর করবে সম্ভাব্য আবহাওয়া পরিস্থিতি ও পেঁয়াজের সরবরাহের ওপর।

এদিকে সরবরাহ সংকট চলতে থাকলে রফতানি কমার পাশপাশি ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি মনে করছে, প্রতিকূল আবহাওয়ার জের ধরে আগামী কয়েক সপ্তাহে লাসালগাঁওয়ের পাইকারি বাজারে প্রতি কুইন্টাল পেঁয়াজের দাম ২ হাজার রুপি ছাড়িয়ে যেতে পারে।

ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি শুরু শিরোনামের সংবাদটির তথ্য বণিক বার্তা সংবাদ মাধ্যম থেকে নেয়া হয়েছে।