কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু,বাকৃবি প্রতিনিধি: ডিজিটাল লগারের মাধ্যমে মাছের রোগের পূর্বাভাস জানা ও রোগ প্রশমন করা সম্ভব হবে। ডিজিটাল লগার ব্যবহার করে মাছের সার্বিক পরিবেশ ও রোগ নির্ণয়ের বিষয়টা বাংলাদেশে প্রথম যা ভবিষ্যতে একোয়াকালচার সেক্টরকে আরো বেগবান করবে।

মাছের সুস্থতা ও স্বাভাবিক অবস্থার জন্য পুকুরের পানির তাপমাত্রা, পিএইচ (অম্লীয় বা ক্ষারীয় অবস্থা) এবং অক্সিজেনের নির্দিষ্ট মাত্রায় থাকা প্রয়োজন। এসব নিয়ামকের কোন একটির স্বাভাবিক অবস্থার পরিবর্তন হলে মাছ সহজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। মাছের উৎপাদন ব্যহত হয়। পুকুরের এসব নিয়ামক ডিজিটাল লগারের মাধ্যমে খুব সহজেই নির্ণয় করা যায়।

‘মাছের রোগের পূর্বাভাস নির্ণয় ও এর প্রশমনের উপায়’ শীর্ষক আন্তজার্তিক কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য প্রদানের সময়ে গবেষণা প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক এসব তথ্য তুলে ধরেন।

বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন ভবনে ওই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণ উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ^বিদ্যালয়ের প্রফেসর ও চলমান কর্মশালার প্রধান গবেষক ড. চার্লস টেইলার।

তিনি তার উপস্থাপনায় বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহকৃত মাছ, পুকুরের পানি ও কাদার বিভিন্ন নমুনার পরীক্ষাকৃত তথ্য ও হিস্টোলজিক্যাল ফলাফল তুলে ধরেন।

মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. গিয়াস উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর  অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো- ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. জসিমউদ্দিন খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর  অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার, ওয়ার্ল্ড ফিশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. ম্যালকম ডিক্সন এবং ভারতের তামিলনাড়– ড. জে জয়ললিতা ফিশারিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. কল্যানুর রিজি জন।

এছাড়া এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড. নিকোলা রজার ও প্রফেসর ড. স্টিভ হিনসিল্ফ উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাজ্যের সিফাস গবেষনা প্রতিষ্ঠান থেকে উপস্থিত ছিলেন ড. ডেভিড বাস ও ড. ডেভিড বার্নার।

এছাড়া ভারতের তামিলনাড়ু ড. জে. জয়ললিতা ফিশারিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. রোজালিন্ড জর্জ, এছাড়া কর্নটক ভেটেরিনারি, এনিম্যাল এন্ড ফিশারিজ বিশ^বিদ্যালয় থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. রমেশ ও ড. গিরিসা এবং সেন্ট্রাল ইনষ্টিটিউট অব ফিশারিজ এডুকেশন থেকে উপস্থিত ছিলেন ড. রাজেন্দ্রন ক্লথ ভ্যালাপ্পিল।

মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে ড. এনামুল হক, ড. এ. এইচ. এম. কোহিনূর, প্রকল্পের সহযোগি বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশ থেকে ড. মুহাম্মাদ মিজানুর রহমান ও ড. বিনয় বর্মন এবং আরবান থেকে সৈয়দ আরিফুজ্জামান। মৎস্য অধিদপ্তর থেকে দিলিপ কুমার সাহা, মোঃ আব্দুল মজিদ,  মোঃ রাশেদুল ইসলাম, মোঃ তরিকুল ইসলাম, মমতাজুন্নেসা, শাহানা নাজনীন প্রমুখ।

বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর  অধ্যাপক ড. মোঃ আলী আকবর প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাছচাষের অগ্রগতি ও ডিজিটাল লগারের সাহায্যে মাছের রোগের পূর্বাভাস নির্ণয় সর্ম্পকিত চলমান প্রকল্পের বাস্তবধর্মী গবেষনার ভূয়সী প্রসংসা করেন।

বিশেষ অতিথি ভাইস-চ্যান্সেলর  অধ্যাপক ড.জসীমউদ্দীন খান তাঁর বক্তব্যে মাছচাষে ডিজিটাল লগার ব্যবহারের এ ধরণের উদ্দ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং মলিকুলার লেভেলে এ ধরণের গবেষনার মাধ্যমে দেশের মৎস্য সেক্টরকে আরও এগিয়ে নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন। বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে একোয়াকালচারের বর্তমান অবস্থা, মাছচাষে বিভিন্ন সমস্যা, মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

কর্মশালায় মৎস্যচাষি, হ্যাচারি মালিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএস ও পিএচডি ছাত্র-ছাত্রী,আমন্ত্রিত দেশী-বিদেশী অতিথিগণ উপস্থিত ছিলেন।