অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি বছর মালয়েশিয়া থেকে চীনের পাম অয়েল আমদানি লক্ষণীয় মাত্রায় কমতে পারে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার পণ্যবাজার বিষয়ক মন্ত্রী।

এছাড়া বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ পাম অয়েল ক্রেতা দেশটির মোট আমদানিও কমার আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে সৃষ্ট বহুমুখী প্রতিবন্ধকতা আমদানিকে নিম্নমুখী করে তোলার কারনেই এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছে।

মালয়েশিয়ান পাম অয়েল বোর্ডের দেয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে মালয়েশিয়া থেকে চীনের পাম অয়েল আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ কমেছে। ভোজ্যতেলের বৈশ্বিক সংকটের কারণে দাম আকাশচুম্বী থাকায় আমদানিকারকদের মাঝে পাম অয়েল কেনায় আগ্রহ ছিল তুলনামূলক কম। বিপরীতে আমদানিকারকরা বিকল্প পণ্য আমদানির মাধ্যমে চাহিদায় সাড়া দিয়েছেন।

পড়তে পারেন: বিদেশে পাম ওয়েলের লিটার ৭১, দেশে ১৫৪ টাকা

গত সপ্তাহে মালয়েশিয়া সফরকালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং ওয়াই বলেন, মালয়েশিয়া থেকে পাম অয়েলসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত চীন। এদিকে এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার পণ্যবাজার বিষয়কমন্ত্রী জুরাইদা কামারুদ্দিন বলেন, চলমান বৈশ্বিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেই চীন মালয়েশিয়া থেকে পাম অয়েল আমদানি বাড়াবে বলে আশাবাদী। তবে এ বছর চীনের মোট ভোজ্যতেল আমদানি কমে যাওয়ার কথাও বলেছেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক মন্দা, মূল্যস্ফীতির চাপ ও ঊর্ধ্বমুখী সুদহারের কারণে আমদানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

জুরাইদার প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি বছর চীনের মোট পাম অয়েল আমদানি দাঁড়াবে ৪৮ লাখ টনে।

জুরাইদা বলেন, বেশকিছু বিষয় পাম অয়েলের দামকে প্রভাবিত করছে। এর মধ্যে রয়েছে পরিশোধন খাতে চাহিদা, চীনে সয়াবিনের বাজার পরিস্থিতি, স্থানীয় বাজারে পাম অয়েলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইন্দোনেশিয়ার ডিএমও পলিসি এবং বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ সংকট। এ বিষয়গুলো মালয়েশিয়া থেকে চীনের পাম অয়েল আমদানি বাড়ানোর সম্ভাবনাকে ম্লান করে দিচ্ছে।

পড়তে পারেন: পাম ওয়েল বাজার চাঙ্গার অপেক্ষায় বিশ্ব

তথ্য বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পর বিশ্ববাজারে পাম অয়েলের সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। লাগামছাড়া হয়ে ওঠে দাম। এতে অন্যান্য ভোজ্যতেলের দামও লাফিয়ে বেড়ে যায়। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় পাম অয়েলের দাম ব্যাপক কমেছে। সর্বশেষ মালয়েশিয়ান বাজার আদর্শ পাম অয়েলের দাম ছিল টনপ্রতি ৩ হাজার ৯০৪ রিঙ্গিত বা ৮৭৬ ডলার ১২ সেন্ট।

এদিকে সব ধরনের পাম অয়েল পণ্যের রফতানি শুল্ক প্রত্যাহার করেছে ইন্দোনেশিয়া। চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। পাম অয়েল রফতানি বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। পাশাপাশি ঊর্ধ্বমুখী মজুদও এর মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। দেশটির এ সিদ্ধান্তের কারণে প্রতিযোগিতার বাজার হারাতে পারে মালয়েশিয়া।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ