ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কলমি এক প্রকারের অর্ধ-জলজ উষ্ণমণ্ডলীয় লতা। একে শাক হিসাবে খাওয়া হয়। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে আমাদের দেশে কলমি শাকের চাষ দিন দিন বাড়ছেই।

আসুন জেনে নিই যেভাবে কলমি চাষে অধিক লাভবান হওয়া যাবে:

জাত: জলাশয়ে জন্মানো কলমিশাক স্থানীয় জাতের। এর উৎপাদন কম। তাই বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ১৯৮৩ সালে একটি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে। নাম গিমাকলমি-১। এর ফলন বেশ ভালো।

সময়: গিমাকলমি সারা বছরই চাষ করা যায়। তবে চৈত্র (মধ্য মার্চ-মধ্য এপ্রিল) থেকে শুরু করে শ্রাবণ (মধ্য জুলাই-মধ্য আগস্ট) পর্যন্ত বীজ বপনের উওম সময়।

আরও পড়ুন: যেভাবে শীতকালীন টমেটো চাষে শতভাগ সফলতা আসে

জমি তৈরি এবং বীজ বপন: প্রথমে ৫-৬ টি চাষ এবং মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। লাইন করে এবং ছিটিয়ে উভয় পদ্ধতিতে বীজ বোনা যায়। তবে লাইনে বীজ বপন করলে যত্ন নিতে সহজ হয়। লাইন হতে লাইনের দূরত্ব ২০ সেন্টিমিটার (৮ইঞ্চি) এবং বীজ হতে বীজের দূরত্ব হবে ১৫ সেন্টিমিটার (৬ ইঞ্চি)। এক সাথে অন্তত ২টি বীজ বোনা ভালো। তবে একাধিক চারা জন্মালে ১টি রেখে বাকিগুলো কেটে দিতে হবে। শতাংশপ্রতি বীজ প্রয়োজন হবে প্রায় ৪০-৫০ গ্রাম।

সার প্রয়োগ: কাক্সিক্ষত ফলন পেতে প্রয়োজন সুষম সার ব্যবহার। মাটির উর্বরতা বিবেচনা করে সার দিতে হয়। এজন্য মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে সার দেয়া উওম। আর তা যদি সম্ভব হয় তাহলে স¦াভাবিক মাত্রায় দিতে হবে। শতাংশপ্রতি যে পরিমাণ সার প্রয়োজন তা হলো- ইউরিয়া ৫৬০- ৬৫০ গ্রাম, টিএসপি ৪০০-৪৯০ গ্রাম, এমওপি ৪০০-৪৯০ গ্রাম এবং জৈব সার ৩২-৪০ কেজি। ইউরিয়া বাদে বাকি জৈব ও অজৈব সার শেষ চাষের সময় মাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হয়। প্রতিবার পাতা সংগ্রহের পর ইউরিয়া সার তিন কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে।

আগাছা দমন : অন্য যে কোনো ফসলের ন্যায় কলমিশাকের জমিতে আগাছা জন্মাতে দেয়া যাবে না। কারণ আগাছা খাবারের সাথে ভাগ বসায়। পাশাপাশি রোগ-পোকা আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে। তাই আগাছা দেখা দেয়ার সাথে সাথে তুলে ফেলতে হবে।

সেচ ব্যবস্থা: শুষ্ক মৌসুমে অবশ্যই সেচ দিতে হবে। বর্ষাকালে সাধারণত সেচের দরকার হয় তবে ওই সময় অনাবৃষ্টি হলে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।

রোগ ও পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা: কলমিশাকে রোগ-পোকা তেমন হয় না বললেই চলে। তবে কিছু পোকার আক্রমণ হতে পারে। যেমনÑ বিটল, বিছা পোকা, ঘোড়া পোকা। এসব পোকা দেখা দিলে হাত দিয়ে ধরে মেরে ফেলতে হবে। তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করে দমন করতে হবে। জমি বেশি স্যাঁতসেঁতে থাকলে গোড়া পচে যেতে পারে। ড্যাম্পিং অফ রোগের কারণে এমনটা হয়। অনুমোদিত ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।

আরও পড়ুন: যেভাবে বরবটি চাষে অধিক লাভবান হবেন

শাক সংগ্রহ: বীজ বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে শাক সংগ্রহের উপর্যুক্ত হয়। প্রথম সংগ্রহের ৮-১০ দিন পরপর পাতা তোলা যাবে। শতাংশ প্রতি গড় ফলন প্রায় ১৬০-১৮০ কেজি।

যে পদ্ধতিতে কলমি চাষে অধিক লাভবান হবেন শিরোনামে লেখাটি লিখেছেন নাহিদ বিন রফিক, টেকনিক্যাল পার্টিসিপেন্ট, কৃষি তথ্য সার্ভিস, বরিশাল। লেখাটি কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি