ছবি: এগ্রিকেয়ার২৪.কম

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ভারত সম্প্রতি চালের ওপর ২০ শতাংশ রফতানি শুল্ক আরোপ করেছে। এটি করার কারণ ঊর্ধ্বমুখী রফতানি কমিয়ে আনা। সেইসাথে ভারতের স্থানীয় বাজারে চালের সরবরাহ ঠিক রাখা। কিন্তু হটাৎ রফতানি বন্ধের জন্য শুল্ক আরোপ করায় আটকে আছে চাল।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, চুক্তি করা দামের ওপর সরকার কর্তৃক আরোপিত নতুন রফতানি শুল্ক পরিশোধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ক্রেতারা। এ কারণে দেশটির বন্দরগুলোয় চাল লোডিং বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গতকাল আটকা পড়েছে প্রায় ১০ লাখ টন চাল। খবর রয়টার্স।

ভারত বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ। দেশটি গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই চাল রফতানি বন্ধের গুঞ্জন ওঠে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।

পড়তে পারেন: সর্বোচ্চে উঠেছে ভারতীয় চালের দাম

গত বৃহস্পতিবার শস্যটির স্থানীয় সরবরাহ বাড়ানোর কথা বলে ভাঙা চাল রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়। এবার স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম বৃষ্টিপাতের কারণে ধানের আবাদ ও ফলন ব্যাহত হয়েছে। ফলে ভারতে চড়া হয়ে উঠেছে চালের বাজার। মূল্য নিয়ন্ত্রণও রফতানিতে লাগাম টানার অন্যতম উদ্দেশ্য।

অল ইন্ডিয়া রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বি ভি কৃষ্ণ রাও বলেন, মাঝরাতেই (শুক্রবার) রফতানি শুল্ক কার্যকর হয়েছে। তবে ক্রেতারা এখনো নতুন শুল্কের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারছেন না। এ কারণে আমরা ভ্যাসেলগুলোয় চাল বোঝাই বন্ধ রেখেছি। ভারত প্রতি মাসে প্রায় ২০ লাখ টন চাল রফতানি করে। এর মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের কাঁকিনাড়া ও বিশাখাপত্তমসহ পূর্বাঞ্চলের বন্দরগুলো থেকেই সবচেয়ে বেশি চাল লোড করা হয়।

পড়তে পারেন: মিয়ানমার থেকে দুই লাখ টন চাল কিনছে সরকার

ভারতের শীর্ষ রফতানিকারক সত্যম বালাজির নির্বাহী পরিচালক হিমাংশু আগারওয়াল বলেন, একই রকম পরিস্থিতিতে এর আগে নয়াদিল্লি ঋণপত্রের বিপরীতে চুক্তি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল।

আগারওয়াল বলেন, চাল বাণিজ্যে মার্জিন অত্যন্ত কম। ফলে রফতানিকারকরা ২০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে সক্ষম হবে না। ভাঙা চালের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের উচিত এরই মধ্যে যেসব চালের এলসি হয়ে গিয়েছে, সেগুলোর অনুমতি দেয়া। গম রফতানি বন্ধ করলেও পুরনো এলসির বিপরীতে সরকার রফতানির অনুমতি দিয়েছিল বলেও জানান তিনি।

ব্যবসায়ীদের প্রাক্কলন অনুযায়ী, বন্দরগুলোয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ টন সাদা চাল আটকা পড়ে আছে। এসব চালে নতুন করে আরোপিত ২০ শতাংশ রফতানি শুল্ক দিতে হবে।

পড়তে পারেন: দুই মাসে ভারত থেকে ১৯ হাজার ৪৮৯ টন চাল আমদানি

ভাঙা চালের ওপর নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে, চুক্তি করা চাল এরই মধ্যে শুল্ক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে অথবা নিষেধাজ্ঞা জারির আগেই যেসব জাহাজ নোঙর করা হয়েছে সেগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। তবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই লোডিং সম্পন্ন করতে হবে।

নয়াদিল্লিভিত্তিক গ্লোবাল ট্রেডিং ফার্মের এক ডিলার জানান, এসব শর্তের আওতামুক্ত সাড়ে তিন লাখ টন চাল বিভিন্ন বন্দরে লোডিংয়ের অপেক্ষায় আছে। এছাড়া যেসব কার্গো গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হয়েছে সেগুলোও ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। বন্দরে আটকে থাকা এসব চীন, সেনেগাল ও জিবুতিতে পাঠানো হবে।

এছাড়া সাদা চালের ক্রেতা দেশগুলো হলো বেনিন, শ্রীলংকা, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। অল ইন্ডিয়া রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন এরই মধ্যে দেশটির সরকারের প্রতি নতুন রফতানি শুল্ক নীতি শিথিল করার আবেদন জানিয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ