মেহেদী হাসান, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীতে আজ থেকে আম নামানো শুরু হলেও আম সেভাবে পাকতে শুরু করেনি। জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী আজ (১৫ মে) থেকেই নামানো যাবে গুটি জাতের আম।

রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকা এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের কিছু এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুটি আমের কেবল আঁটি হয়েছে পাকার উপযুক্ত হয়নি এখোনো। চাষিদের মধ্যে আম নামানোর কোন ব্যস্ততা নেই। তারা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক হয় এবং আম ঠিকভাবে পাকতে শুরু করে তাহলে আমে লাভবান হতে পারবেন ।

রাজশাহীর পবা উপজেলার মুরারিপুর এলাকার চাষি আব্দুল গণি বলেন, আম নামাতে আরো সময় হবে। আম পাকার মতো হয়নি এখোনো। ১০-১৫ দিনের মধ্যে আম নামানো যাবে কিছু। আম পাকার সময় আসার আগেই জেলা প্রশাসন আম নামানোর সময় দিয়েছেন। করোনায় আমের দাম পাবো কি পাবো না এটা নিয়ে চিন্তায় আছি।

তিনি আরো বলেন, মানুষ যদি ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তাহলে কিছুটা আশা করা যায়।

জেলা প্রশাসক হামিদুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, আম নামানোর সময় নিয়ে চাষিদের কথা রাখা হয়েছে। তাদের এবং কৃষি বিভাগ, ফল গবেষণা কেন্দ্র সবার মতামতের ভিত্তিতেই সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। আম না পাকলে নামানোর দরকার নেই।

তিনি আরো বলেন, কেউ যদি অপরিপক্ব আম নামান তাহলে আমরা দেখব তিনি আমগুলো কেন নামাচ্ছেন। অপরিপক্ক আম কেমিক্যাল দিয়ে পাকানোর জন্য যদি চেষ্টা করেন সেটাও আমরা ব্যবস্থা নিব। অবশ্যই আম পরিপক্ক অবস্থায় নামাতে হবে। আম চাষিদের পরিবহন সমস্যা হলে পুলিশ প্রশাসন সহায়তা করবে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দিন এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, ঠান্ডার কারণে আম না-ও পাকতে পারে। গেল বছরও আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু চাষিরা আম হাতে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে বললেন, আম পেকে গেছে, তারা নামাতে পারছেন না সময় বেঁধে দেয়ার কারণে। তাই এবার একটু আগেই সময় দেয়া হয়েছিল।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, রাজশাহীর কোথাও গাছে আম পেকেছে বলে খবর পাইনি এখোনো। তবে দু- এক জায়গায় আম পেকেও থাকে সেটা খুবই কম। তাকে আম পাকা বলা যায় না।

আম পরিবহনের জন্য চাষিদের শঙ্কা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কৃষিপণ্য দেশের যেকোন স্থানে নিয়ে যেতে পারবেন। কৃষি বিভগ এবং পুলিশ প্রশাসন সহায়তা করবে। আম চাষিদের এ বিষয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। গাছে যখন আম পাকবে তখনই চাষিরা বাজারে নিতে পারবেন। বাজারজাতকরণে কোন সমস্যা হবে না।

রাজশাহী জেলায় আম বাগান রয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। শুক্রবার (১৫ মে) থেকে গুটি আম পাড়ার সময় শুরু হয়েছে। আগামী ২০ মে থেকে গোপালভোগ নামাতে পারবেন চাষিরা। এছাড়া রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা ২৫ মে, হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ১৫ জুন এবং ফজলি ১৫ জুন থেকে নামানো যাবে। সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে নামবে আশ্বিনা এবং বারী আম-৪ জাতের আম। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন এই সময় নির্ধারণ করে দেয়।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, আমরা চাঁপাইয়ে আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দেয়নি। যার যখন গাছে আম পাড়ার মতো উপযুক্ত হবে তখন পাড়তে পারবেন।