মেহেদী হাসান, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে রাজশাহীর বাজারগুলোতে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ এবং বিভিন্ন কাঁচা সবজির দাম।গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির মাংসের দাম ছিল প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। বর্তমানে প্রতিকেজি মাংস ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।

তবে অপরিবর্তিত রয়েছে সবজি, মাছ, ডাল, চিনি, আটা, গুড়া দুধসহ সব ধরনের মুদি পণ্যের দাম। আর বাজারে বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। সেই সাথে কিছু সবজির দাম কমেছে আবার বেড়েছে কিছু সবজির। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মিষ্টি কুমড়ার দাম কমেছে ১৫ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা থেকে ১২ টাকায়। পটল, বেগুনের দাম কিছুটা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫টাকা থেকে ৪০ টাকায়।

আজ মজ্ঞলবার (২ জুন) রাজশাহীর উপশহর নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, সাহেববাজার কাঁচাবাজার, লক্ষীপুর কাঁচাবাজারসহ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

রাজশাহীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। লেয়ার মুরগির দাম প্রতিকেজি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা থেকে ২১০ টাকায়। প্রতিকেজি হাঁসের মাংসের দাম প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে।পাতিহাঁস ৩২০ টাকা, রাজহাঁস ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহের দামেই প্রতিকেজি গরুর মাংস ৫৪০ টাকা, খাসির মাংস ৭২০ সটাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে পিঁয়াজ, আদা ও রসুন। তবে কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকায়। কেজি প্রতি দেশি পিঁয়াজ ৩৮ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় পিঁয়াজ ২০ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। রসুন ১৪০ টাকা, আদা ১১০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সাহেববাজর কাঁচাবাজার এলাকার মুরগি ব্যবসায়ী মিঠু হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪. কম কে জানান, ‘রাজশাহীতে স্কুল কলেজের ছাত্রদের দিয়ে আমাদের ব্যবসা। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমাদের বেকার বসে থাকতে হচ্ছে। অল্প বেঁচাকেনায় কর্মচারীর বেতন জোটে না। মুরগির দাম কমে গেছে। আগে বিক্রি করলাম ব্রয়লার ১৬০ সত্তর। আর এখন ১৪০ টাকা’

নগরীর কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, লাউ পিস মানভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকা, বেগুন ২০ থেকে ২৫ টাকা, বাঁধাকপি ২০ থেকে ২৫ টাকা পিস, মূলা ১০ থেকে ১৫ টাকা, পাকা টমেটো ১৫ থেকে ৩০ টাকা, দেশি আলু ৩০ টাকা, আলু ২৪ টাকা। প্রতি কেজি করলা ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা। এছাড়া সবধরনের শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১৫ টাকা আঁটি।

সবজি ব্যবসায়ী মুকুল এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, ‘বাজারে প্রচুর সবজি, কিন্তু কেনার লোক নেই। লকডাইন খুলে দিলো তারপরও বেঁচাকেনা নেই। আমাদের সীমিত বেঁচাকেনা এখন।তবে স্কুল কলেজ কুললে ছাত্ররা আসলে আমাদের স্বস্তি।’


সাহেববাজারের মাছ ব্যবসায়ী জামশেদ আলী এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, প্রতি কেজি রুই বিক্রি করছি ১৮০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা, কাতল ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা।এখন কেনার লোক নেই। মাছ নিয়ে বসে আছি সারাদিন। টুকটাক বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও, শোল ৪৫০ টাকা, পাবদা ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ছোট আকারের প্রতিকেজি ইলিশের দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। মাঝারি এবং বড় আকারের ১২শ’ থেকে ১৩’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে মুরগির মাংসের দাম কমলেও ডিমের দাম বেড়েছে। মুরগির প্রতি হালি লাল বাদামি ডিম ৩০ টাকা, সাদা ডিম ২৬ টাকা, হাঁসের ডিম ৩৬ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৫০ টাকা, কোয়েল ৮ টাকা হালি বিক্রি হতে দেখা গেছে।

খুচরা ও পাইকারি চাল বিক্রেতা সুশীল এগ্রিকেয়ার২৪. কম কে জানান, চালের দাম বাড়েনি। আগের দামেই আছে। করোনায় চালের দামে তেমন প্রভাব পড়েনি বলে জানান এপি চাউল ভান্ডারের মালিক প্রকাশ প্রসাদ।

এদিকে গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের চাল। মিনিকেট ৫০ থেকে ৫৬ টাকা, নতুন আঠাশ ৪৩ থেকে ৪৫ টাকা, গুটিস্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, পাবনা সুমন ৪২ তেকে ৪৫ টাকা, জিরাশাইল ৫২ টাকা, ৪৯ নম্বর চাল ৬০ টাকা, চিনিগুঁড়া আতপ ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অপরিবর্তিত রয়েছে মুদি পণ্যের দাম। বাজারে প্রতি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, চিনি আমদানিকৃত ৬৪, দেশি চিনি ৬৪ টাকা, মসুর ডাল ১৩০, মুগডাল ১৪০, খেঁসারি ৯০, এঙ্কার ডাল ৪৪ টাকা কেজি।

মটর ৮০, ছোলা ৭২, লবণ ৩০ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল ৮৮ টাকা আর ব্র্যান্ডভেদে ৫ লিটারের তেলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৫২০ থেকে ৫০৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রাইস, পুষ্টি ব্রান্ড তেল প্রতি ৫ লিটার বোতল ৬৪০ থেকে ৬৩০ দরে বিক্রি হচ্ছে।