জেলা প্রতিনিধি, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪কম: রাজশাহীর বিভিন্ন বাজারে বেশ ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার ও সোনালী মুরগি। ভালো দাম থাকায় লাভের ভাগটাও বাড়ছে। এতে সোনালী ও ব্রয়লার খামারি-ব্যবসায়ীরা খুশি হলেও ডিম উৎপাদনকারী লেয়ার মুরগির খামারিদের প্রাণ উষ্ঠাগত।

ডিমের দাম কম হওয়ায় উঠছেনা উৎপাদন খরচ। ফলে লোকসানে লোকসানে দিশেহারা প্রান্তিক লেয়ার খামারিরা। রাজশাহীর সাহেববাজার মাষ্টারপাড়া কাঁচাবাজারের পোল্ট্রি মুরগি ও ডিম বিক্রেতা সাইফুল এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, সব ধরনের মুরগির দামই মুটামুটি ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। করোনার শুরু থেকেই খামারিরা লস করছে। এখন ভালো দাম আছে তাই লাভ হচ্ছে তাদের। ডিমের দাম দিন দিন কমছে। এই দামে খামারিদের টিকে থাকা মুশকিল। সবচেয়ে বিপদে লেয়ার খামারিরা। মুরগি বেচতেও পারেনা আবার ডিমের দামও নাই। কিন্ত যারা ব্যবসায়ীরা আছি তাদের একটু ভালোই লাভ হচ্ছে।

আরোও পড়ুন: ফেনীতে মারা গেলো ৫০ হাজার লেয়ার-সোনালী মুরগি!

এই ব্যবসায়ী জানান, ব্রয়লার ১৪০ টাকা কেজি, সোনালী ২৭০ টাকা, লেয়ার সাদা ১৭০ টাকা, লেয়ার লাল ২০০ টাকা এবং দেশী মুরগি ৪২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারের ডিম ব্যবসায়ী শামীম হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, ডিমের দাম রমজানে আরোও কমতে পারে। আবার বলাও যায় না, বাড়তেও পারে। কাঁচাবাজারের ঠিক নাই। মাল (ডিম) একটু টান পড়লে দাম বাড়ে আবার ক্রেতা কমে গেলে বা চাহিদা না থাকলে দাম কমে যায়। লেয়ার মুরগির খামারিদের লোকসান যাচ্ছে। দাম যখন একটু ভালো থাকে তখন লাভ ভালোই হয়। দাম নাই, লাভ নাই।

তিনি জানান, প্রতিহালি (৪টি) লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৭-২৮ টাকায়। সাদা ডিম ২৪ টাকা ও হাঁসের ডিম ৩৬ টাকা হালি দরে বিক্রি করছেন।

আজ সোমবার (৫ এপ্রিল ২০২১) নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

ডিমের দাম কমা ও মুরগির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, খাদ্যের এবং বাচ্চার দাম অত্যন্ত বেশি। বস্তাপ্রতি খাদ্যেও দাম ফের বাড়ানো হয়েছে ৫০-৭৫ টাকা। দাম বাড়ার কারণে মুলত বাচ্চা তুলছেন না খামারিরা। করোনার ভয়ে কয়েকমাস আগে খামারিরা বাচ্চা না তোলার কারণে এখন তৈরি মুরগি বাজারে টান পড়ে। এ কারণেই মূলত দাম বেড়ে ৩০০ টাকা কেজি লাগে। এখন মুরগির বাজার আস্তে আস্তে কমবে। তবে, এখন যে বাজার আছে তাতে আমাদের লাভ হচ্ছে। কমে গেলে লাভ থাকেনা।

রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, রাজশাহীতে ৬০ ভাগ খামার ফাঁকা হয়ে গেছে। বার্ড ফ্লু রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক মুরগি মারা গেছে। ভয়ে আর নতুন বাচ্চা তুলছেন না খামারিরা। আগের মতো আবার মুরগির দাম বাড়বে। এখন যা একটু কমেছে তাও থাকবে না।

ডিমের দাম বাড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিমের দামও বাড়বে। অনেক লেয়ার খামারি মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। খাদ্যের দাম বেড়েছে তিন মাসে ১৫০ থেকে ১৭৫ টাকা। এই দাম বাড়ানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না। বৈশ্বিকভাবে দাম ১২ টাকা থেকে ১৩ টাকা বাড়লে বাংলাদেশে সিন্ডিকেটে দাম বাড়ায় ৭০-৮০ টাকা। এটা কোন নীতি নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ