পাহাড়ী তুলা চাষ প্রযুক্তি

ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ভারত বিশ্বের শীর্ষ তুলা উৎপাদনকারী দেশ। পণ্যটির রফতানিকারকদের বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় দেশটি তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর ভারত থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৪৫ লাখ বেল (প্রতি বেলে ৪৮০ পাউন্ড) তুলা রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে।

আগের বছরের তুলনায় এবার দেশটি থেকে তুলা রফতানি বাড়তে পারে ৫০ শতাংশ। ২০১৯ সালে ভারত থেকে মোট ৩০ লাখ বেল তুলা রফতানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির রফতানি বাড়তে পারে ১৫ লাখ বেল।

প্রতি বছর ১ অক্টোবরে ভারতে তুলা রফতানির নতুন মৌসুম শুরু হয়। চলে পরের বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সেই হিসাবে দেশটিতে তুলা রফতানির ২০১৯-২০ মৌসুম একেবারে শেষের পথে রয়েছে। এ মৌসুমে ভারত থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলা রফতানি আগের প্রাক্কলনের তুলনায় প্রায় এক-পঞ্চমাংশ বাড়তে পারে। মৌসুমের শেষ ভাগে এসে এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে কটন অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (সিএআই)। মূলত উৎপাদন প্রত্যাশার তুলনায় বেশি হওয়া এবং আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বেশি থাকার কারণে ২০১৯-২০ মৌসুমে ভারত থেকে তুলা রফতানি বাড়তে পারে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর বিজনেস লাইন ও বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

চলতি বছরের জুলাইয়ের শুরুতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সিএআই ২০১৯-২০ মৌসুমে ভারত থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে ৪৭ লাখ বেল (প্রতি বেলে ১৭০ কেজি) তুলা রফতানির পূর্বাভাস দিয়েছিল। সম্প্রতি এ প্রাক্কলন আরো তিন লাখ বেল বাড়িয়ে ৫০ লাখ বেলে উন্নীত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সেই হিসাবে আগের প্রাক্কলনের তুলনায় সাম্প্রতিক পূর্বাভাসে তুলা রফতানির সম্ভাব্য পরিমাণ প্রায় এক-পঞ্চমাংশ বা ১৯ শতাংশ বাড়িয়েছে সিএআই।

২০১৮-১৯ মৌসুমে ভারত থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৪৩ লাখ বেল তুলা রফতানি হয়েছিল বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে সিআইএ। সেই হিসাবে এবারের মৌসুমে দেশটি থেকে আগের মৌসুমের তুলনায় সাত লাখ বেল বাড়তি তুলা রফতানির সম্ভাবনা দেখছে প্রতিষ্ঠানটি। করোনা মহামারীর মধ্যেও চলতি বছরের আগস্টে দেশটি থেকে তুলা রফতানি অনেকটাই বেড়েছে। সেপ্টেম্বরেও পণ্যটির রফতানি চাঙ্গা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারত থেকে অক্টোবর-সেপ্টেম্বর মৌসুমে তুলা রফতানি চাঙ্গা হওয়ার পেছনে এবার দেশটিতে পণ্যটির বাড়তি উৎপাদনকে চিহ্নিত করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। সিএআইয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ মৌসুমে ভারতে সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার বেল তুলা উৎপাদন হতে পারে। প্রতিষ্ঠানটির আগের প্রাক্কলনের তুলনায় এবারের মৌসুমে ভারতে বাড়তি ১৯ লাখ বেল তুলা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে করোনা মহামারীর মধ্যেও আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তি চাহিদা ২০১৯-২০ মৌসুমে দেশটি থেকে তুলা রফতানি বাড়িয়ে দিতে পারে।

তবে উৎপাদন ও রফতানি বাড়লেও ২০১৯-২০ মৌসুমে ভারতে তুলার অভ্যন্তরীণ ব্যবহার কমে আসার সম্ভাবনা দেখছে সিএআই। প্রতিষ্ঠানটির সাম্প্রতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, এবারের মৌসুমে ভারতে সব মিলিয়ে ২ কোটি ৫০ লাখ বেল তুলা ব্যবহার হতে পারে, যা আগের প্রাক্কলনের তুলনায় ৩০ লাখ বেল কম। মূলত করোনা মহামারীর জের ধরে এবারের মৌসুমে ভারতে তুলার ব্যবহার প্রাক্কলনের তুলনায় কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এবারের মৌসুমে ভারতীয় আমদানিকারকরা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সব মিলিয়ে ১৬ লাখ বেল তুলা আমদানি করতে পারেন বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে সিএআই। আগের প্রাক্কলনের তুলনায় ২০১৯-২০ মৌসুমে ভারতে তুলা আমদানির প্রাক্কলন এক লাখ বেল বাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যদিও ২০১৮-১৯ মৌসুমে ভারতে মোট ৩২ লাখ বেল তুলা আমদানি হয়েছিল।

তবে রফতানি বাড়লেও চলতি বছর ভারতে তুলা উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইউএসডিএ। প্রতিষ্ঠানটির সাম্প্রতিক প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০২০ সালে ভারতে মোট ২ কোটি ৮৫ লাখ বেল তুলা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

করোনার মধ্যেই ৪৫ লাখ বেল তুলা রফতানির সম্ভাবনা ভারতের শিরোনামে সংবাদের তথ্য বণিক বার্তা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।