নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ময়মনসিংহে তারাকান্দায় শশা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪ টাকা কেজি। পাইকারি বাজারে ৪ টাকা হলেও ক্রেতা মিলছে না। শশার স্তুপ নিয়ে মাথায় হাত চাষিদের।

সোমবার (২৫ এপিল) জেলার তারাকান্দা উপজেলার গোয়াতলা শসার বাজারে শশার এ দাম দেখা যায়। তবে, একই শশা ঢাকার বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন চাষিরা।

রোজার খুচরা বাজারে শশার চাহিদা থাকা সত্বেও এতো কম দামে শশা বিক্রি করতে হচ্ছে। মূল কারণ হিসেবে চাষিরা জানান, সিন্ডিকেটের কারণে চাষিরা নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বাজারে যে দামে শশা বিক্রি করতে হচ্ছে তাতে উৎপাদন খরচ উঠছে না।

জেলার তারাকান্দা ও ফুলপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সারা বছর প্রচুর পরিমাণে শসার আবাদ হয়। এই সকল এলাকার চাষীরা গোয়াতলা বাজারে শসা বিক্রি করায় এই বাজার শসার বাজার নামে পরিচিত হয়েছে। এই বাজার থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০ – ৪০ টন শসা বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করা হয়। এই বাজারে পাইকারি ব্যবসায়ীর সংখ্যা ৩০- ৩৫ জন।

পড়তে পারেন: যেভাবে শশা খাওয়া মানবদেহে ক্ষতির কারণ!

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র্র্রে জানা গেছে, জেলায় ১১৫৩ হেক্টর জমিতে শসার আবাদ করা হয়েছে। এ বছর শশার ফলনও ভালো হয়েছে। রোযায় শসার চাহিদা মাথায় রেখে অনেক কৃষক শশার আবাদ করেছেন। কিন্তু চাহিদার তুলনায় বাজারে শসার সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম একেবারে কমে গেছে। আর এই সুযোগ নিচ্ছেন আড়ৎদার ও দালালরা।

কৃষকের উৎপাদিত শসার দাম হঠাৎ করে পড়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার শত শত কৃষক। আবার পচনশীল পণ্য হওয়ার কারণে কোনোভাবে মজুদ করার সুযোগ না থাকায় পানির দরে বাজারে শসা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষক।

তারাকান্দা ইউনিয়নের গোহালকান্দি গ্রামের মোসলেম উদ্দিন বাজারে শসা নিয়ে এসেছেন বিক্রি করতে। তিনি জানান, ২০ শতাংশ জমিতে শসার আবাদ করেছেন। খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। এখন বাজারে শসার যেই দাম তাতে বাজারে শসা নিয়ে আসতে ভ্যান ভাড়াও মিলছে না।

পড়তে পারেন: নওগাঁয় ৩ বিঘা জমির শশা গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা!

বকশীমুল গ্রামের শসা চাষী শাতাবউদ্দিন সহ বাজারে বেশ কয়েকজন চাষীও বললেন একই কথা। খুচরা বাজারে শসার চাহিদা থাকা সত্বেও কেন পাইকারি বাজারে দাম পাচ্ছে না। প্রশাসনে পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এদিকে এই বাজারে কয়েকজন পাইকারের সাথে কথা বললে তারা জানান, ঢাকা থেকে আড়ৎদাররা গাড়ি পাঠাচ্ছেন না। আড়ৎদার মাল না কিনলে তাদের বিক্রি করার সুযোগ নেই। এছাড়াও বাজারে চাহিদার তুলনায় শসার আমদানি বেশি বলে দাম কমেছে জানিয়েছেন তারা।

ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে অতিরিক্ত উপপরিচালক (শশ্য) শোয়েব আহমেদ জানান, শসার দাম হঠাৎ একেবারে কমে যাওয়ায় আগামী মৌসুমে শসা চাষ কমে যেতে পারে। এবছর যারা শসা করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আগামী মৌসুমে তারা শসার আবাদ করতে চাইবেন না। ফলে বাজারে শসার সরবরাহ কমে যাবে। মূলত আড়তদার ও দালালদের কারণে চাষিরা লোকসানে পড়ছেন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ