নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: এবার অন্যান্য বছরের চেয়ে শীতকালীন সবজির দাম বেশ ভালো। শীতের ফসল শিম চাষে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। ফলনের সাথে সাথে দাম পাওয়ার কারণে সেই খুশি যেন একটু বেড়েই গিয়েছে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা সূবর্ণচরে শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার শত শত হেক্টর জমিতে গড়ে উঠেছে শিমের রাজ্য। নোয়াখালীর শস্যভাণ্ডার খ্যাত সূবর্ণচরের বিস্তীর্ণ মাঠ, জমি ও ঘেরের আইলে সর্জন পদ্ধতিতে মাচায় শিম চাষ করা হয়েছে।

পড়তে পারেন: চাষ করুন শীতকালীন ফসল ঘোড়া শিম

এবার সূর্বণচরে কৃষি অফিস থেকে সরবরাহ করা উচ্চ ফলনশীল জাত হইট্রা, বারি শিম, বিইউ শিম, ইপসা শিমসহ দেশীয় জাতের শিমের আবাদ করা হয়েছে। আগে বৃষ্টির পানিতে অথবা শিশিরে ফুল ভিজে শিম পঁচে যেত। বর্তমানে শিমের উন্নত জাত উদ্ভাবনের কারণে ওই সমস্যা নেই, কোনও ধরনের ঝামেলা ছাড়াই চাষ করা যাচ্ছে।

উপজেলার মোহাম্মদপুর ও চরকার্ক ইউনিয়নের যেদিকে দৃষ্টি যায়, সেদিকেই সবুজ-বেগুনী রংয়ের শিমের সৌন্দর্য। চলতি মৌসুমের পুরোটা জুড়ে থাকবে শিমের এই আবাদ। যদিও এ পর্যন্ত কয়েক দফা শিমের ফলন তোলা হয়েছে। তবে এখনও ফুল আসায় ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত প্রায় একইরকম ফলন হবে।

পড়তে পারেন: যেভাবে শিম চাষে বীজ বপন ও সার প্রয়োগে সফলতা আসে

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, সূবর্ণচরে চলতি শীত মৌসুমে দুই হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে শিমের চাষ করেছেন সহস্রাধিক চাষি। প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ২৫ টন করে প্রায় পাঁচ হাজার ২৫০ টন শিম উৎপাদন হবে। বর্তমানে বাজারে শিমের ভালো দাম রয়েছে। মাসখানেক আগে শিমের প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকায়, এখন তা নেমেছে ৪০-৫০ টাকায়।

কিছুদিন আগেও বাড়ির আঙ্গিনায় সীমিত পরিসরে শিম চাষ করা হতো। এখন চাহিদা বেড়েছে, ফলনও বেড়েছে। ফলে কৃষি বিভাগের পরামর্শে অনাবাদী পতিত জমিকে আবাদী জমিতে রূপান্তরিত করে শিমের আবাদ করা হচ্ছে।

স্থানীয় শিম চাষিরা জানান, সূবর্ণচরের যে চাষি আগে এক একর জমিতে শিমের আবাদ করতেন, এখন তিনি তিন-চার একর জমিতে শিমের আবাদ করছেন। তারা জানান, কৃষি অফিস থেকে পরামর্শের পাশাপাশি সার ও বীজ পাচ্ছেন তারা। আর এবার শিমের ভালো দাম পেয়েছেন। বাকি মৌসুমেও লাভবান হবেন বলে আশা তাদের।

পড়তে পারেন: যেসব জাত নির্বাচনে শিম চাষে শতভাগ সফলতা আসে

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা বলেন, সরকারের কৃষি বান্ধব নীতি ও পরিকল্পনার কারণে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে চাষিদের শিমসহ নানা ধরনের সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে। তারা লাভবানও হচ্ছেন। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় চাষিরা শিম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। চলতি মৌসুমে শুধুমাত্র উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নেই ৯০০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। আগামী বছর তা ১২০০-১৫০০ হেক্টর পর্যন্ত বাড়ানের লক্ষ্য রয়েছে। তখন উৎপাদন আরও বাড়বে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ