চাষ ব্যবস্থাপনা ও করণীয় ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: প্রচুর প্রোটিন সমৃদ্ধ সবজি শিম। শিমের বীজও সেদ্ধ করে খাওয়া হয়।এটি লতানো উদ্ভিদ হওয়ায় ফসলি জমি ছাড়াও রাস্তার ধারে, আইলে, ঘরের চালে ফলানো যায়। আর সঠিক পদ্ধতিতে শিম চাষে বীজ বপন ও সার প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

আসুন জেনে নিই যেভাবে শিম চাষে বীজ বপন ও সার প্রয়োগে সফলতা আসে:
শিমের বীজ বপনের সময়: আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত বীজ বোনার উপযুক্ত সময়।
বীজের পরিমাণ:

বপন পদ্ধতি মাদা প্রতি হেক্টর প্রতি
সারিতে বোনা হলে ৪-৫ টি ১৫ কেজি
মাদায় বোনা হলে ৪-৫ টি ১০ কেজি

বীজ বপনের নিয়ম: প্রতি মাদায় ৪-৫ টি বীজ বুনতে হয়।বীজ বপনের আগে ১০-১২ ঘন্টা বীজ ভিজিয়ে নিতে হবে। প্রতিটি মাদায় ২-৩ টি করে সুস’ চারা রেখে বাকী চারা তুলে ফেলতে হয়।

মাদার দুরত্ব: এক মাদা থেকে অন্য মাদার দুরত্ব ৩.০ মিটার।

আরও পড়ুন: যেসব জাত নির্বাচনে শিম চাষে শতভাগ সফলতা আসে

প্রতি মাদার জন্য সার প্রয়োগ: গোবর ১০ কেজি, খৈল ২০০ গ্রাম, ছাই ২ কেজি, টিএসপি ১০০ গ্রাম, এমওপি ৫০ গ্রাম। মাদা তৈরি করার সময় এসব সার প্রয়োগ করতে হবে। চারা গজালে ১৪ থেকে ২১ দিন পর পর দু’কিসি-তে ৫০ গ্রাম করে ইউরিয়া ও ৫০ গ্রাম করে এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে।

পরিচর্যা: কোন অবস্থাতেই গাছের গোড়ায় পানি যাতে না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে জমিতে প্রয়োজন মত সেচ দিতে হবে। মাঝে মাঝে মাটি নিড়ানি দিয়ে আলগা করে দিতে হবে। এছাড়া গাছ যখন ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার লম্বা হবে তখন মাদার গাছের গোড়ার পাশে বাঁশের ডগা মাটিতে পুঁতে বাউনির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরও পড়ুন: শিম চাষে শতভাগ সফলতা পাওয়ার কৌশল ও পদ্ধতিসমূহ

পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন ব্যবস্থাপনা: শিমের সবচেয়ে ক্ষতিকর পোকা হল ফল ছিদ্রকারী পোকা ও জাব পোকা। চারা অবস্থায় পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা মারাত্নক ক্ষতি করে। লাল ক্ষুদ্র মাকড়ও অনেক সময় বেশ ক্ষতি করে থাকে। ফুল ফুটলে থ্রিপস ক্ষতি করতে পারে। ফল পেকে এলে বিন পড বাগ বা শিমের গান্ধি পোকা ক্ষতি করে। আইপিএম পদ্ধতি অনুসরণ করে এসব পোকামাকড় দমনের ব্যসস্থা নিতে হবে।এছাড়া শিমের সবচেয়ে মারাত্মক রোগ দু’টি- মোজেইক ও অ্যানথ্রাকনোজ।এই দুটি রোগ দমনেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে ফসলের বিভিন্ন পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনে কৃষি উপজেলার পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

ফসল সংগ্রহ: আশ্বিন-কার্তিক মাসে ফুল ধরে। ফুল ফোটার ২০-২৫ দিন পর ফসল সংগ্রহ করা যায়। ৪ মাসেরও বেশী সময় ধরে ফল দেয়। ফলন প্রতি শতকে ৩৫-৭৫ কেজি, হেক্টর প্রতি ১০-১৫ টন।

যেভাবে শিম চাষে বীজ বপন ও সার প্রয়োগে সফলতা আসে শিরোনামে লেখাটি কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি