নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: শীত না এলেও রাজশাহীর বাজারে দেখা মিলেছে বেশ কিছু শীতকালীন সবজি। এরমধ্যে রয়েছে, টমেটো, ফুলকপি, গাজরসহ বেশি কিছু সবজি। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো, ফুলকপি, পাতাকপি। ফুলকপির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা ও পাতাকপি দশ টাকা কমে ৯০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃষকরা আগাম ফসলের ভালো দাম পায়। এ কারণেই তারা আবহাওয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে আগাম ফসল উৎপাদনে ব্যস্ত। আগাম কপি, মুলা, গাজর সবকিছুরই কয়েকগুণ দাম পাওয়া যায়। এছাড়া কেয়েকদিন আগের ভারী বর্ষণের কারণে মরিচ গাছ মারা যাওয়ায় মরিচের দাম দ্বিগুণ হয়েছে।

রাজশাহীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাজারে আমদানি হয়েছে নানান শীতকালীন সবজি। প্রতি পিস ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ফুলকপি ও পাতাপপি (ছোট) কিনতে লাগছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ১০০ টাকা ও টমেটো ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পড়তে পারেন: ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি, ব্রয়লারের কেজিতে বাড়লো ১৫ টাকা

প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে, লাউ প্রতি পিস ৩০ টাকা, শশা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, ঝিংগা ৫০ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা, পটল ৩০ থেকে ৪০টাকা, ঢেঁড়শ ৩০ টাকা, বরবটি ৮০টাকা, পেঁপে ১৫ থেকে ২০ টাকা, কচুর লতি ৫০টাকা, লাল গোল আলু ৩০ টাকা এবং ডায়মন্ড আলু ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চাল কুমড়া পিস ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৩০ টাকা, পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা ও কাঁচকলার হালি ২৫ থেকে ৩০ টাকা। মূলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে।

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ার কারণে পেঁয়াজের দাম কমেছে। ক’দিন দাম বাড়তি থাকলেও ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে দেশী পেঁয়াজ। যার কেজিতে কমেছে ৫ টাকা। অন্যদিকে ৪০টাকা কেজির ভারতীয় নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পড়তে পারেন: শ্রাবন মাসে কি কি সবজি চাষ করবেন, জানুন বিস্তারিত

সবজি চাষিরা বলছেন, কপি, টমেটো, মূলা শীতকালীন সবজি হলেও গ্রীষ্মকালেও চাষ করা হচ্ছে। বেশি দামে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। তবে, ফলন মৌসুমের তুলনায় ফলন অর্ধেক।

এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের মত এই সপ্তাহেও বাজারে বড় ইলিশ মাছ (১ কেজি) প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা দরে। রুই মাছ আকার ভেদে কেজি ২৪০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল মাছ আকার ভেদে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪৫০ টাকা, বেলে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৮০০, পাঙ্গাস মাছ প্রতি কেজি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাছের দাম বাড়তি। ইলিশের কেজিতে ২০০ টাকা বেড়েছে। ভারতে ইলিশ রপ্তানির কারণে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ইলিশ খেতে পারছে না। অন্যদিকে ইলিশ রপ্তানিতে দেশের রাজস্ব আয় বাড়ছে বলেও তারা জানান। চাষকৃত মাছের দাম ও নদীর মাছের দাম বেড়েছে।

পড়তে পারেন: ফের চড়া সবজির বাজার, বেগুনের কেজি ৮০

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি সোনালি (কক) মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায়। লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা।

এদিকে পোল্ট্রি খামারিরা বলছেন, চলতি বছরে দফায় দফায় খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতে সয়াবিন রপ্তানি হচ্ছে। কিন্ত দেশের খামারিদের লোকসানে ফেলার কায়দা করে খাদ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। প্রতিপিস ডিম উৎপাদনে ৮ টাকা খরচ হলেও দাম সে অনুযায়ী বাড়েনি। ডিমের দাম না বাড়লে, এভাবে উঠানামা করলে অনেকেই পেশা বদল করবেন বলেও জানান তারা।

পড়তে পারেন: ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষে ৫ গুণ বেশি ফলন

ডিম ব্যবসায়ী রেজাউল করিম মিঠু এ্রগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, প্রতি হালি লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা, সাদা ডিম ৩৬ টাকা। হাঁসের ডিম প্রতিহালি ৪৮-৫০ টাকা। এছাড়াও কোয়েল পাখির ডিম ১২ হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

মুরগি ব্যবসায়ীরা জানান, খামারিরা পোল্ট্রিতে লাভ করতে পারছে না। পাইকারিতে ব্রয়লার ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি করলে, সোনালী মুরগি ২০০ টাকা, লেয়ার ২০০ টাকার উপরে বিক্রি করলে খামারিরা কিছুটা এগিয়ে যেতে পারবেন। তাছাড়া এখন যে দাম রয়েছে সে দামে খামারিদের লোকসান হবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ