অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গম উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২০২২-২৩ মৌসুমে ইইউতে সব ধরনের গম উৎপাদন ১২ কোটি ৫০ লাখ টনে নামতে পারে বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান কমিশন।

সরবরাহ ও চাহিদাসংক্রান্ত প্রতিবেদনে ইউরোপিয়ান কমিশন জানায়, তবে শস্যটির রফতানি রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছতে পারে। কিন্তু এর আগের পূর্বাভাসে ১৩ কোটি ৪ লাখ টন উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, এ পূর্বাভাস সত্য হলে উৎপাদন ২০২১-২২ মৌসুমের চেয়েও কমবে। ওই মৌসুমে ১৩ কোটি ১ লাখ টন গম উৎপাদন হয়েছিল।

এক প্রতিবেদনে কমিশন জানায়, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্পেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আবাদ কমে গিয়েছে। সারসহ উৎপাদন উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি ও সংকট কৃষকদের আবাদে নিরুৎসাহিত করছে। এছাড়া খরা ও দাবদাহের প্রভাবও উৎপাদন পূর্বাভাস কমাতে বাধ্য করেছে।

পড়তে পারেন: নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ১৮ লাখ টন গম রফতানি ভারতের

তবে কমিশন ইউরোপীয় ইউনিয়নের গম রফতানি পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখেছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২২-২৩ মৌসুমে রফতানি ৩ কোটি ৮০ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে রফতানি রেকর্ড সর্বোচ্চে উন্নীত হবে। ২০২১-২২ বিপণন মৌসুমে রফতানি প্রাক্কলন ছিল তিন কোটি টন।

চলতি মাসেই ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুম শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকদের প্রত্যাশা, এ মৌসুমে আন্তর্জাতিক বাজারে ইইউর গমের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হবে। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই বিশ্ববাজারে শস্যটির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে দায়ী করা হচ্ছে কৃষ্ণ সাগরীয় অঞ্চলের নিম্নমুখী সরবরাহকে।

রুশ সেনারা ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দর অবরুদ্ধ করে রেখেছে। বন্দরে মাইন পুঁতে রাখার অভিযোগও পাওয়া গিয়েছে। ফলে দেশটি পশ্চিম সীমান্তের স্থল, রেল ও নদীবন্দর দিয়ে অত্যন্ত স্বল্প পরিমাণ গম রফতানিতে বাধ্য হচ্ছে।

পড়তে পারেনগম উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়বে রাশিয়া

তথ্য বলছে, প্রতি মাসে ইউক্রেন ৬০ লাখ টন গম রফতানি করলেও যুদ্ধের পর তা ১০ লাখ টনে নেমেছে। অন্যদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার রফতানি প্রবাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে আমদানিনির্ভর দেশগুলো ইউরোপসহ বিকল্প উৎস থেকে গম ক্রয়ের দিকে ঝুঁকছে।

এদিকে নিম্নমুখী উৎপাদন ও বাড়তি রফতানির কারণে মজুদ পূর্বাভাস কমিয়েছে কমিশন। পূর্বাভাস অনুযায়ী, নতুন মৌসুমে অঞ্চলটিতে গমের মজুদ ১ কোটি ৩২ লাখ টনে নামতে পারে। আগের মৌসুমের তুলনায় মজুদ ৪০ লাখ টন কমবে। এদিকে গমের পাশাপাশি ভুট্টা, যব ও সরিষা তেলবীজ উৎপাদন পূর্বাভাসও কমিয়েছে ইউরোপিয়ান কমিশন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ