নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পাঁচ কেজি ওজনের একটি মিষ্টি আলুর দেখা মিলেছে। কৃষি বিভাগ বলছে, এর আগে কোনদিন এতবড় আলু উৎপাদন হয়নি কিংবা চোখে পড়ার রেকর্ড নাই।

সোমবার (২১ মার্চ) বিকেলে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ধাতুর পহেলা গ্রামের কৃষক মো. হোসেন মিয়ার জমি থেকে মিষ্টি আলুটি তোলা হয়। কৃষক হোসেন মিয়া ওই গ্রামের রেজু মিয়ার ছেলে।

বৃহদাকার এ আলু দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে উৎসুক মানুষ তার বাড়িতে এসে ভিড় করছেন। বর্তমানে আলুটি উপজেলা কৃষি অফিসের তত্বাবধানে সপ্তাহব্যাপী মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তী মেলায় প্রদর্শনীতে আনা হয়েছে।

পড়তে পারেন: পদ্মার চরে মিষ্টি আলু চাষ, দ্বিগুণ লাভের আশা চাষিদের

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মোগড়া ইউনিয়নের হোসেন মিঞা প্রতিবছরই ৩ থেকে ৫ কেজি ওজনের মিষ্টি আলু চাষ করেন। তার জমিতে উৎপাদিত মিষ্টি আলুর সর্বনিম্ন ৩ কেজি ওজন হয়। শুধু একটা আলু ৫ কেজি হয়েছে তা নয়। তবে, কৃষি বিভাগ এই জাতের নাম সঠিকভাবে জানাতে পারেননি।

জানা যায়, দেশে বারি মিষ্টি আলু-১, বারি মিষ্টি আলু-২,বারি মিষ্টি আলু-৩বারি মিষ্টি আলু-৪,বারি মিষ্টি আলু-৫, বারি মিষ্টি আলু-৬,বারি মিষ্টি আলু-৭,বারি মিষ্টি আলু-৮, বারি মিষ্টি আলু-৯, বারি মিষ্টিআলু-১০,বারি মিষ্টি আলু-১১, বারি মিষ্টি আলু-১২ ও বারি মিষ্টি আলু-১৩ ইত্যাদি কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কয়েকটি জাত চাষ হয়ে থাকে।

উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, বৃহদাকার এ আলুর বিষয়ে জানতে পেরেছি। এর আগে কখনো এতোবড় আলু দেখা যায়নি। সাধারণত ৫০০ থেকে ১০০০ গ্রাম হতে পারে মিষ্টি আলু। মাটির গুণাগুণ ভালো হলে মিষ্টিআলুর ফলন ভালো হয়। বিশেষ করে বেলে-দোঁয়াশ মাটি।

তিনি আরো বলেন, কেউ যদি এই জাতের আলু চাষ করতে চান তাহলে যোগাযোগ করতে হবে। হোসেন মিঞা তার বাড়ির পাশে একটা জায়গায় বীজ হিসেবে লতা সংগ্রহে রাখেন। মূল মিষ্টি আলুর বীজ নেই; অঙ্গজ জনন হওয়ায় ডাটা রোপন করতে হয়।

পড়তে পারেন: লিচু গাছে কলম ছাড়াই আম!

কৃষক হোসেন মিয়া বলেন, ১৫ শতাংশ জমিতে কৃষি অফিসের পরামর্শে সিন্ধি প্রজাতির লাল মিষ্টি আলুর লতা রোপণ করেন। আলুর লতা রোপণের ৬-৭ মাসের ব্যবধানে জমিতে ফলন হয়। জমি থেকে আলু তোলার জন্য মাটি খুঁড়তে শুরু করেন। প্রথমে বুঝতে পারিনি এটি মিষ্টি আলু। পরে উৎসাহ নিয়ে আলুর চারদিক থেকে মাটি সরানোর পর অবাক হয়ে যায়। এরপর বিশাল বড় আকৃতির মিষ্টি আলুটি তোলা হলে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরে ওজন করে দেখা যায় এই আলুর ওজন ৫ কেজি ১০০ গ্রাম। মুহূর্তে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সবাই আমার বাড়িতে আলুটি দেখতে আসে।

তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত এ উপজেলার মধ্যে সব চাইতে বড় আলু ফলন তার জমিতে হয়েছে বলে জানায়। তিনি বলেন, কম খরচে অধিক ফলন পেতে মিষ্টি আলু চাষের বিকল্প নেই। ১৫ শতাংশ জায়গার মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ মণ আলু উৎপাদন হবে বলে তিনি আশা করছেন। প্রতিকেজি আলু স্থানীয় বাজারে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানায়। এখন পর্যন্ত তিনি ৫ হাজার টাকার ওপর আলু বিক্রি করেছেন বলে জানায়।

পড়তে পারেন: মিষ্টি আলুর নতুন জাত ‘অরেঞ্জ স্টার’ চাষ হবে দেশেই

শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার বলেন, মেলা ঘুরে দেখতে গিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসের স্টলে এই আলুটি নজরে পড়ে। প্রথমে বুঝিনি এটি আলু। তারপর লোকজনে বলাবলি করায় সেটি ভালো করে দেখা হয়। দেখে খুবই ভালো লেগেছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ