পাম অয়েলের ভবিষ্যৎ ঘুরে দাঁড়াতে পারে।

গত এক মাস সবচেয়ে খারাপ মৌসুম কাটানোর পর সম্প্রতি পাম ওয়েলেন দাম বেড়েছে ৩ শতাংশ। এমনই খবর প্রকাশ করেছে বিজনেস রেকর্ডার।

বুরশা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে নভেম্বরে সরবরাহ করার মতো বেঞ্চমার্ক পাম অয়েল চুক্তি ১৩৪ রিঙ্গিত বা ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ বেড়ে ১ টনে ৪ হাজার ২৭২ রিঙ্গিতে দাঁড়িয়েছে।

পড়তে পারেন: সয়াবিনে নজর, পাম ওয়েল আমদানি কমেছে ভারতের

এর আগে গত সোমবারই আগস্টের অলস রফতানি তথ্য ও অপরিশোধিত তেলের কম দামের কারণে এ চুক্তি কমে যায় ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি বছরে মুদ্রাটির মান অবনমন হয়েছে ৭ শতাংশ। ২০১৭ সালের জানুয়ারির পর এবারই ডলারের বিপরীতে রিঙ্গিতের মান কমেছে শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ।

১-১৫ আগস্টের মধ্যে মালয়েশিয়ার পাম অয়েল পণ্যের রফতানি আগের মাসের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বা ৫ লাখ ১৬ হাজার ৭২ টন। সাধারণত অন্যান্য তেলের দামে বেশি পরিমাণে প্রভাবিত হয় পাম অয়েলের বাজার। কারণ পাম অয়েলকে বরাবর উদ্ভিজ্জ তেলের বাজারে জায়গা করে নেয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করতে হয়।

এদিকে ভোজ্যতেলের বাজারে অস্বস্তি বছরের শুরু থেকেই। আমদানি-রফতানির মারপ্যাঁচে দামে উঠানামা কিছুতেই থামছেনা। বিশ্বের অন্যতম তেল আমদানিকারক দেশ নজর দিয়েছে সয়াবিন তেলের দিকে ফলে তাদের পাম ওয়েল আমদানি কমিয়েছে।

পড়তে পারেন: মালয়েশিয়া থেকে পাম ওয়েল আমদানি কমাতে পারে চীন

হেলেনিক শিপিং নিউজের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাইয়ে ভারতে পাম অয়েলের আমদানি আগের মাসের তুলনায় ১০ শতাংশ কমেছে। দেশটির তেল পরিশোধনকারীদের সয়াবিন তেলের ক্রয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পাম অয়েলের আমদানি কমেছে।

অন্যদিকে নয়াদিল্লির ভোজ্যতেলের আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেয়ার পদক্ষেপও এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করছে দেশটির বাণিজ্য সংস্থা।

দ্য সলভেন্ট এক্সট্রাক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (এসইএ) এক বিবৃতিতে জানায়, জুলাইয়ে ভারতের পাম অয়েলের আমদানি ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২০ টন কমেছে। জুনে আমদানির পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৯০ হাজার ৯২১ টন।

পড়তে পারেন: সয়াবিন তেলের দাম কমলো ৬ টাকা

সেখানে জুলাইয়ে সয়াবিন তেলের আমদানি ১২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে। ওই মাসে ৫ লাখ ১৯ হাজার ৫৬৬ টন সয়াবিন তেল আমদানি করে দেশটি। জুলাইয়ে সূর্যমুখী তেলের আমদানি ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩০০ টন হয়েছে।

এদিকে গত মার্চে বিশ্ববাজারে রেকর্ড গড়ে সয়াবিনের দাম টনপ্রতি প্রায় দুই হাজার ডলারে উঠে যায়। তবে এখন ধীরে ধীরে কমছে। চলতি সপ্তাহে দাম কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৬০ ডলারে। তবে দেশের বাজারে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।

এ ছাড়া এই দামের সঙ্গে জাহাজ ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক খরচ যুক্ত হয়। তবে ভোজ্যতেলের দাম বিশ্ববাজারে কমে এলে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে দেশের বাজারে দাম পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে জানান বাংলাদেশ সরকার।

পড়তে পারেন:তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে সরকার: কৃষিমন্ত্রী

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরও কমেছে। একদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল আমাদানিকারক দেশ চীনের চাহিদা কমে যাওয়ার তথ্য প্রকাশ, অন্যদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রপ্তানিকারক কোম্পানি সৌদি অ্যারামকো তেলের উৎপাদন বাড়াতে প্রস্তুত থাকার ঘোষণা দেওয়ায় দাম কমছে তেলের। খবর রয়টার্সের।

সোমবার বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ১ দশমিক ১৪ ডলার বা ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে হয়েছে ৯৭ দশমিক ০১ ডলার। এর আগে শুক্রবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম কমেছিল ১ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দর প্রতি ব্যারেল এখন ৯১ দশমিক ০৩ ডলার। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম ১ দশমিক ০৬ ডলার বা ১ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। শুক্রবার ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দাম ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে।

চীন সরকারের প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী অপ্রত্যাশিতভাবে গত জুলাইয়ে চীনের অর্থনীতির গতি কমেছিল। অপর দিকে চীনের দৈনিক পরিশোধিত তেল উৎপাদন কমে হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর চীনের অর্থনীতির গতি ও পরিশোধিত জ্বালানি তেলের উৎপাদন এতটা কমেনি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ