গুতুম মাছের কৃত্রিম প্রজনন

মৎস্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: প্রিয় মাছ চাষি আজ গুতুম মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন প্রযুক্তি পর্ব-২ তুলে ধরা হলো। আগের পর্বে প্রাথমিক ধারণা ও পুকুর তৈরি বিষয়ে বলা হয়েছে। তিন পর্বের আজ দ্বিতীয় পর্ব তুলে ধরা হলো।

বাংলাদেশে গুতুম মিঠাপানির একটি জনপ্রিয় মাছ। গুতুম মাছ এলাকাভেদে গুটিয়া, গোরকুন, পোয়া,পুইয়া ও গোতরা নামে পরিচিত। উত্তর জনপদে গোতরা, গোতা বা পুয়া নামে পরিচিত।

বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস গুতুম মাছের প্রজননকাল, তবে জুন মাস এ মাছের সর্বোচ্চ প্রজনন মৌসুম।



প্রজনন মৌসুমের পূর্বেই অর্থাৎ জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারী মাসে প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে সুস্থ সবল ও রোগমুক্ত ৬-৭ গ্রাম ওজনের গুতুম মাছ সংগ্রহ করার পর প্রস্তুতকৃত পুকুরে প্রতি শতাংশে ১৪০-১৫০টি গুতুম মজুদ করে কৃত্রিম প্রজননের জন্য ব্রুড তৈরী করা যায়।

তাছাড়া, খামারে গুতুম মাছের পোনা প্রতিপালন করে একক মজুদ ঘনত্বে ব্রুড তৈরী করা যেতে পারে।

খাদ্য প্রয়োগ পরিচর্যা: ব্রুড মাছের পরিপক্কতার জন্য প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩২% প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োগ করা হয়। মাছের দৈহিক ওজনের ৮-৫% হারে খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে।

নিয়মিত পানির গুণাগুণ যেমন তাপমাত্রা, পিইচ, দ্রবীভূত অক্সিজেন, অ্যামোনিয়া ও মোট ক্ষারত্বের পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মজুদের ২ মাস পর থেকে প্রতি ১৫ দিন পর পর জাল টেনে ব্রুড মাছের দেহের বৃদ্ধি ও পরিপক্কতা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

কৃত্রিম প্রজনন কৌশল: প্রজনন মৌসুমে পরিপক্ক পুরুষ ও স্ত্রী ব্রুড প্রতিপালন পুকুর থেকে সিস্টার্নে স্থানান্তর করা হয়।

অতঃপর পুরুষ ও স্ত্রী মাছকে যথাক্রমে ১:১ অনুপাতে হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগের জন্য মসৃণ জর্জেট হাপায় স্থানান্তর করা হয়।

সিস্টার্নে ও হাপায় প্রয়োজনীয় অক্সিজেন নিশ্চিত করতে কৃত্রিম ঝর্ণা ব্যবহার করা হয়। প্রজননের জন্য গুতুম মাছের স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে ওভোপিন দ্রবণ বক্ষ পাখনার নিচে ইনজেকশন হিসেবে প্রয়োগ করা হয়।

গুতুম মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন প্রযুক্তি পর্ব-২ এর তিন নম্বর পর্ব আগামীতে প্রকাশ করা হবে। এ মাছ চাষ নিয়ে আপনাদের কোন প্রশ্ন বা জানার ইচ্ছে থাকলে আমাদের ফেসবুক পেজে অথবা ইমেলে লিখে জানাবেন। আমরা সঠিক তথ্য আপনাকে জানাবো।

আরও পড়ুন: গুতুম মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন প্রযুক্তি পর্ব-১