নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাসায়নিক পদার্থ ও ধুলিকণামুক্ত শুটকির সরবরাহ নিশ্চিত, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারসৃষ্টিসহ একাধিক উদ্দেশ্যে ২০২১ সালের মধ্যে কক্সবাজারে ২৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আধুনিক শুটকি মহাল স্থাপিত হবে।

সম্প্রতি (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিএফডিসির সম্মেলনকক্ষে বার্ষিক কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ কর্ম্পরিকল্পনাবিষয়ক এক পর্যালোচনাসভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরুকে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ আওতায় ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৪৫ একর জমির ওপর ২৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারের খুরুশকুলে ‘একটি আধুনিক শুটকি মহাল ও ইটিপি’ স্থাপিত হবে।

`কক্সবাজার জেলার খুরুশকুলে একটি আধুনিক শুটকি মহাল ও ইটিপি স্থাপন প্রকল্প’ এর অধীন এই শুটকি মহাল ও ইটিপি স্থাপনের কাজটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (BFDC) এবং প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল হচ্ছে চলতি ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, পুনর্বাসিত পরিবারগুলোর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, ক্লাস্টারভিত্তিক সেমি-ইম্প্রোভড ও আধুনিক শুটকি প্রক্রিয়াকরণ-পদ্ধতি চালু করা, রাসায়নিক পদার্থ ও ধুলিকণামুক্ত শুটকির সরবরাহ নিশ্চিত করা, গুণগতমানসম্পন্ন কাঁচামাছ সংগ্রহের জন্য আধুনিক মৎস্য অবতরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং শুটকিমাছের জন্য অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারসৃষ্টি করা।

কক্সবাজারে আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পগ্রহণের ফলে উক্ত এলাকায় বসবাসরত পরিবারসমূহের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ হতে খুরুশকুলে বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প নেয়া হয়।

আর পুনর্বাসিত পরিবারগুলোর কর্মসংস্থানের জন্যই এই আধুনিক শুটকি মহাল ও ইটিপি স্থাপনের কার্যক্রমও গ্রহণ করা হয়। আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ কর্তৃক উক্ত স্থাপনা ২টি বিএফডিসির মাধ্যমে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ায় একটি শুটকি মহাল ও ইটিপি আস্থাপনের ডিপিপি তৈরির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

প্রকল্পের নির্মাণকাজের মধ্যে ৫০ টনের আইস প্লান্ট, মৎস্য অবতরণ ও প্রক্রিয়াকরণ শেড, ২৪৫০টি গ্রিনহাউজ বেসড মেকানিক্যাল ড্রায়ার, ৫০টি সেমি মডার্ন মেকানিক্যাল ড্রায়ার ৫০০ ও ৩০০ টনের ২টি কোল্ড স্টোরেজ,  কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাব, ফিসমিল ও ফিস ওয়েল প্লান্ট ও মেশিন রুম নির্মাণ উল্লেখযোগ্য।

এছাড়াও ড্রাইফিস মার্কেট, মাল্টিপ্লেক্স বিল্ডিং, কনভেয়র বেল্ট  (জেটি হতে ল্যান্ডিং স্টেশন), ট্রাক পার্কিং, প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি, ইলেক্ট্রিক সাবস্টেশন ও জেনারেটর হাউজ, ৪টি টয়লেট জোন, ইটিপি ও ডব্লিউটিপি স্থাপন এবং ২৪ কিলোমিটার অভ্যন্তরিণ রোড-নেটওয়ার্কও তৈরি করা হবে।

অন্যদিকে ১৮৬৮ কোটি সাড়ে ৮৬ লাখ ব্যয়ে মৎস্য অধিদফতরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন “সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিসারিজ প্রকল্প” এর আওতায়ও বিএফডিসির জন্য দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে মৎস্য অবতরণকেন্দ্র (Fish Landing Station) এবং চট্টগ্রাম মৎস্য বন্দর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের কাজ চলছে।

প্রতিমন্ত্রীকে বিএফডিসির অতীতের লোকসান কাটিয়ে বর্তমানের লাভজনক অবস্থানের ব্যাপারেো অবহিত করলে প্রতিমন্ত্রী বিএফডিসির আরকোনো জমি দেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞারোপ করেন এবং একে আরো লাভজনক করার ওপর জোর দেন।

বিএফডিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) দিলদার আহমদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) সুবল বোস মনি, জয়েন্ট চিফ লিয়াকত আলীসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পিআরও-সিনিয়র ইনফরমেশন অফিসার মোঃ শাহ আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।