৬৫দিন সামুদ্রিক মৎস্যআহরণে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ৬৫দিন সামুদ্রিক মৎস্যআহরণে নিষেধাজ্ঞা, জেলেদের সহায়তার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মাছের মজুদ সংরক্ষণ, সুষ্ঠু ও বিজ্ঞানসম্মত সহনশীল আহরণ নিশ্চিতেই এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

আজ বুধবার (২২ মে) মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদসম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এসব তথ্য জানান।



সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত ২০০ নটিক্যাল মাইল অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ২০ মে হতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত একটানা ৬৫দিন পর্যন্ত সকল প্রকার যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক মৎস্যযান কর্তৃক মৎস্য ও ক্রাস্টিয়ান্স (চিংড়ি, লবস্টার, কাটলফিশ ইত্যাদি) আহরণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এসময় সামদ্রিক মাছসমূহের প্রজনকাল হওয়ায় ডিমওয়ালা মাছের নিরাপদ পরিবেশসৃষ্টিসহ মাছের মজুদ সংরক্ষণ, সুষ্ঠু ও বিজ্ঞানসম্মত সহনশীল আহরণনিশ্চিত করতেই এই নিষেধাজ্ঞারোপ করেছে মৎস্য ও প্রানিসম্পদমন্ত্রণালয়।

উপকূলীয় ১২টি জেলাধীন ৪২ উপজেলার ৪ লাখ ১৪ হাজার ৭৮৪টি জেলেপরিবারের মাছ-আহরণ ব্যতিত বিকল্প আয়ের উৎস না থাকায় এবারই প্রথম নিষিদ্ধকালীন ৬৫দিনের জন্য ভিজিএফ কর্মসূচীর আওতায় পরিবারপ্রতি মাসিক ৪০ কেজি করে মোট ৩৬ হাজার মেট্রিক টন চালসহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

ঈদের আগেই এ খাদ্যসহায়তা দেয়া হবে বলে সংবাদসম্মেলনে জানানো হয়। মাছের তিনটি নিষিদ্ধসময়ের জন্য আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ২২৫ কোটিটাকা বরাদ্দের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ৮ মাস জাটকানিধরোধ এবং ২২দিন মা-ইলিশসংরক্ষণের মতন ৬৫দিনের জন্যও ভিজিএফ খাদ্যসহায়তার ফলে জেলে পরিবারের খাদ্যসংস্থান হওয়ায় তাঁরা সামুদ্রিক ডিমওয়ালা মাছ ও চিংড়ি আহরণ থেকে বিরত থাকবে এবং ডিমওয়ালা মাছ ও চিংড়ির নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

আরও পড়ুন: সমুদ্রের সম্পদ আহরণে সরকারের সাথে শিল্পমালিকদের এগিয়ে আসার আহ্বান

উল্লেখ্য, বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে ২৫৫টি বানিজ্যিক মৎস্যট্রলার, ৩২,৮৫৯টি যান্ত্রিক ও ৩৪,৮১০টি অযান্ত্রিক ফিশিংবোট কর্তৃক নির্বিচারে মৎস্যআহরণের ফলে সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।

এজন্যই সামুদ্রিক মৎস্য অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর অধীনে বিধি ১৯দ্বারা ২০১৫ সাল হতে প্রতিবছর প্রধানপ্রজনন মৌসুমে মোট ৬৫ (পয়ষট্টি) দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় বাণিজ্যিক ট্রলারসহ সকলপ্রকার নৌযানদ্বারা মাছ, চিংড়ি ও চিংড়ি জাতীয় মৎস্যআহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

তবে ৩২ সহস্রাধিক যান্ত্রিক মৎস্যযান সমুদ্রে মাছধরায় জড়িত থাকলেও এদের মধ্যে মাত্র ৫,৪০০টি মৎস্যযান বৈধ বা নিবন্ধিত থাকায় অবৈধ নৌযানের দৌরাত্ম বেড়েই চলেছে।

প্রতিমিন্ত্রী বলনে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে মোট ৪২.৭৭ লক্ষ মে.টন মাছ উৎপাদিত হওয়ার মাধ্যমেই দেশ মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এই উৎপাদনের মধ্যে সামুদ্রিক মৎস্যখাতরে অবদান ৬.৫৬ লক্ষ মে. টন, যা দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের ১৫.৩৩ শতাংশ।

সংবাদসম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছ উল আলম মণ্ডল, মৎস্য অধিদফতরের ডিজি আবু সাইদ মোঃ রাশেদুল হক, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডিজি ড ইয়াহিয়াসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

৬৫দিন সামুদ্রিক মৎস্যআহরণে নিষেধাজ্ঞা, জেলেদের সহায়তার ঘোষণা এর সংবাদটি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার (পিআরও) মোঃ শাহ আলম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।