নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশের সামুদ্রিক অর্থনৈতিক এলাকায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণপূর্বক বিজ্ঞানসম্মত ও সহনশীল আহরণ নিশ্চিতকল্পে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মাছ ধরা ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা-১৯৮৩ এর আওতায় মোট ৬৫দিন সকল প্রকার মৎস্য নৌযান কর্তৃক সকল প্রজাতির মৎস্য ও ক্রাস্টাশিয়ান্স (চিংড়ি, লবস্টার, কাটল ফিস প্রভৃতি) আহরণ নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এ উপলেক্ষ্যে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহ।

আগামীকাল বুধবার (২০ মে) থেকে সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি সংবাদের তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোঃ ইফতেখার হোসেন, জনসংযোগ কর্মকর্তা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৯ মে) এ বিষয়ে নির্দেশাপত্র জারী করে নৌবাহিনী সদর দপ্তর, জননিরাপত্তা বিভাগ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, কোস্ট গার্ড, র্যা ব সদর দপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, নৌপুলিশ, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, সমুদ্র উপকূলীয় ১৪ জেলার জেলা প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ, জেলা ও উপজেলা মৎস্য দপ্তরে প্রেরণ করেছে মন্ত্রণালয়।

নির্দেশাপত্রে সমুদ্রগামী সকল চ্যানেলের উৎসমুখে সকল মৎস্য নৌযানের গমন বারিত করা, মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকরণের ব্যাপক প্রচার, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, মৎস্য আড়ৎ, বরফকল ইত্যাদিতে নিষিদ্ধকালীন মৎস্য অবতরণ না করা, কেনা-বেচা বন্ধ এবং বরফ সরবরাহ না করা, মৎস্য অধিদপ্তরের সদর দপ্তরে সমন্বয় সেল খোলা, নিষিদ্ধকালীন বিদেশী মৎস্য নৌযান যতে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় মৎস্য অহরণ করতে না পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ, সমুদ্রগামী জেলেদের খাদ্য সহায়তা সুষ্ঠু ও যথাযথ বিতরণ নিশ্চিত করা এবং জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কর্তৃক জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে নিষিদ্ধকাল যথাযথ বাস্তবায়নের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এ সকল নির্দেশনার আলোকে মৎস্য অধিদপ্তর বেতার-টেলিভিশনে বিশেষ বার্তা প্রচার, স্থানীয় পর্যায়ে মাইকিং, ব্যানার প্রদর্শন, লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ, স্থানীয় প্রচারণায় কমিউনিটি রেডিওকে সম্পৃক্তকরণ, সমুদ্রে অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, মাছঘাট, আড়ত ও বাজার মনিটরিং, সার্ভেল্যান্স চেকপোষ্ট হতে মৎস্য নৌযান মনিটরিং, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার, কন্ট্রোল রুম খোলা, বাণিজ্যিক ট্রলারের সমুদ্র যাত্রা আদেশ প্রদান বন্ধকরণ, সমুদ্রে অবস্থানরত সকল ট্রলার ফিশিং বোট ১৯ মের মধ্যে ফিরে অসা নিশ্চিতকরণ, উপকূলীয় বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে অবহিতকরণ সভা আয়োজনসহ নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

এদিকে এসব কার্যক্রম যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অনলাইন সভার মাধ্যমে দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “সমুদ্রে মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, মাছকে বেড়ে উঠতে দেয়া এবং অবৈধ মাছ আহরণ বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত আমরা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে চাই। কাউকে আইনের বাইরে কোন কিছু করতে দেয়া হবে না।” এ কাজে স্থানীয় প্রশাসন, নৌবাহিনী, পুলিশ, কোস্টগার্ড, র্যা ব, নৌপুলিশসহ স্থানীয় অংশীজনদের সহায়তা কামনা করেন তিনি। এ সময়ে সমুদ্রগামী ৪ লক্ষ ১৯ হাজার ৫ শত ৮৯টি জেলে পরিবারের জন্য ইতোমধ্যে ২৩ হাজার ৪৯৬ দশমিক ৯৮ মেট্রিক টন ভিজিএফ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।