ইউসুফ আলী সুমন, নওগাঁ প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে এবারের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ভেসে আসা কচুরিপানার প্রাদুর্ভাবের কারণে থমকে গেছে কৃষকের স্বপ্ন। এসব কচুরিপানা পরিস্কার করতে কৃষকরা হিমশিম খাচ্ছে। আসন্ন বোরো মৌসুমে ধানচাষ নিয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

জানা গেছে, এবারে আত্রাইয়ে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কৃষকের সকল স্বপ্ন ম্লান হয়ে যায়। একাধিকবার তারা আমন চাষের প্রস্তুতি নিয়েও ব্যর্থ হন।পরপর দু’বারের বন্যায় তাদের সকল স্বপ্ন তছনছ হয়ে যায়। উপরোন্ত এ বন্যায় নদীর বিভিন্ন বাঁধের ভাঙন দিয়ে প্রচুর পরিমান কচুরিপানা প্রবেশ করে মাঠে। মাঠে এসব কচুরিপানা প্রবেশের পর তা আর বের হয়নি। ফলে এ কচুরিপানাগুলো আবদি জমিতে আটকা পড়ে যায়।

আরও পড়ুন: নওগাঁয় দেশি মাছে পরিপূর্ণ আত্রাই নদী পাড়ের শুটকি পল্লী

উপজেলার কাঁন্দওলমা, বাঁকিওলমা, বিপ্রবোয়ালিয়া,পবনডাঙ্গা, নবাবেরতাম্বু,খনজোর, মধুগুড়নই, ভোঁপাড়া,সাহাগোলা,রসুলপুর, ভবানীপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা যায় ওই মাঠগুলোতে প্রচুর পরিমান কচুরিপানা আবাদি জমিতে আটকে পড়েছে। ফলে এসব কচুরিপানা পরিষ্কার করে জমিগুলো বোরো চাষের উপযোগী করতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কাঁন্দওলমা গ্রামের কৃষক ওহিদুর রহমান বলেন, আমাদের অনেক জমিতে কচুরিপানা আটকে পড়েছে। বিশেষ করে যে জমিগুলোতে আমরা বোরো বীজতলা তৈরি করতাম এ জমিগুলোও এখন কচুরিপানার নিচে পড়ে রয়েছে। এ কচুরিপানা পরিষ্কার করতে আমাদের অতিরিক্ত অনেক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক মো. আজাদ প্রামানিক বলেন, আমাদের মাঠে যেমন কচুরিপানা, তেমনি ঘাস জন্মেছে। কচুরিপানা ও ঘাস মারা ওষুধ দিয়ে কোন কাজ হচ্ছে না। এখন বোরো চাষের উপযোগী করতে আমাদের প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে। এভাবে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে আমরা আবাদ করি। কিন্তু সময়মত আমাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় আমরা লোকসানের শিকার হই।

আরও পড়ুন: নওগাঁয় নদী দখল করে মৎস্য ঘের, বেঁধে রাখা হচ্ছে মৃত প্রাণী

এ ব্ষিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন এগ্রিকেয়ার.কমকে বলেন, আত্রাই বোরো ধানের জন্য বিখ্যাত একটি এলাকা। এ উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। এবারে বন্যায় কৃষকের অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে। সেই সাথে আবাদি জমিগুলোতে কচুরিপানা আটকে থাকায় আরও তাদের জন্য আর্থিক ক্ষতিকর। তবে তাদের সরকারীভাবে কিছুটা সহযোগিতা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের প্রণোদনা সহায়তার আওতায় নেয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি