নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গতকাল দেশের ৩ বিভাগে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির পাশাপাশি দুটি জেলায় শৈত্য প্রবাহ বইতে পারে বলে জানিয়েছিল আবহাওয়া দপ্তর। আজ (৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২) আপাতত বৃষ্টি বিদায় নিয়ে শৈত্য প্রবাহের দিকে ঝুঁকছে দেশ এমনটিই হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আজ রোববার সকাল ৯ টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার পূর্বাভাসে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো: আব্দুল হামিদ মিঞা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে। এছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পড়তে পারেন: পানিবন্দি জমির আলু তুলতে ব্যস্ত চাষিরা

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে তেঁতুলিয়া ১৫ মিলিমিটার এবং সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কুতুবদিয়া ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলিসিয়াস।। আগামী ৩দিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে এবং আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে।

পড়তে পারেন: বৃষ্টিতে খুশি আম চাষিরা, শঙ্কায় সবজি

আজ সকালে প্রকাশিত আগামী ২৪ ঘন্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের নীলফামারি,  কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা, মৌলভীবাজার ও সীতাকুণ্ড উপজেলার উপর দিয়ে শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের নদী অববাহিকায় শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তবাবে হালকা তেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক দক্ষিণ/দক্ষিণ পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় (৮ থেকে ১২) কি.মি. যা অস্থায়ীভাবে দমকায় ঘণ্টায় ৩০ কি.মি.। আজ সকালে ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আদ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ। আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে আর সূর্যোদয় ভোর ৬টা ৩৭ মিনিটে।

পড়তে পারেন: বৃষ্টি ও শীত নিয়ে নতুন তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস

মাঘ মাসে হঠাৎ বৃষ্টিতে শঙ্কিত জয়পুরহাটের আলুচাষিরা। বৃষ্টি বেশি হলে জমিতে পানি জমে আলু নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালের বিনশিরা মাঠে পাকরি আলু তুলছেন রফিকুল ইসলাম ও তার মা। রফিকুল ইসলাম বলেন, টানা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে গেছে। এই আলু তোলার এখনো সময় হয়নি। কিন্তু বৃষ্টির পানি বের করে দেওয়ার কোনো উপায় নেই। পানি জমিতে থাকলে আলু পচে নষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য কাঁদার মধ্যে আলু তোলা হচ্ছে। পরে তা পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।

কালাইয়ের থুপসারা গ্রামের আলুচাষি রবিউল ইসলাম, রনি হোসেন বলেন, এমনিতেই বাজারে আলুর দাম কম। প্রতি বিঘায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। তার ওপর বৃষ্টির পানি। আলুর খেত নিমজ্জিত হওয়ায় জমিতে পানি জমেছে। আলুর জমিতে পানি জমে থাকলে পচন ধরবে। এতে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হবে।

পড়তে পারেন: লালপুরে বাণিজ্যিকভাবে বেদেনার চাষ শুরু

সদরের বম্বু ঘোনাপাড়া গ্রামের আলুচাষি আবদুল খালেক বলেন, নিজের ২ বিঘা এবং বর্গা নেওয়া ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। ইতোমধ্যে এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করে প্রায় ৩ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। এখন বৃষ্টির কারণে আলুতে পচন ধরলে পথে বসতে হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭ হাজার হেক্টর, কালাইয়ে ১১ হাজার ১০০ হেক্টর, ক্ষেতলালে ৯ হাজার হেক্টর ও আক্কেলপুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ