অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ২০২১-২২ বিপণন মৌসুমে গমের রফতানি কমতে পারে। বৈশ্বিক বাণিজ্য কমার কারণে দাম বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

মার্কিন কৃষি বিভাগের চলতি মাসে দেয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২১-২২ মৌসুমে গমের বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়াবে ২০ কোটি ১ লাখ টন। মার্চে ২০ কোটি ৩১ লাখ টনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বৈরী আবহাওয়া, জ্বালানি সংকটসহ বহুমুখী প্রতিবন্ধকতার কারণে বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

ওয়ার্ল্ড এগ্রিকালচারাল সাপ্লাই অ্যান্ড ডিমান্ড এসটিমেটস রিপোর্টে ইউএসডিএ জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র ও কাজাখস্তানের দুর্বল রফতানি পরিস্থিতির কারণে নিম্নমুখী বাণিজ্যের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়া, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার রফতানি বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও তা বাজারে সৃষ্ট ঘাটতি মোকাবেলায় সক্ষম হবে না।

পড়তে পারেন: কমেছে গম ও ভুট্টার দাম

চলতি মৌসুমে খাদ্যশস্যটির বৈশ্বিক উৎপাদন ৭৭ কোটি ৮৮ লাখ টনে পৌঁছতে পারে। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ১৩ কোটি ৯০ লাখ টন উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকলেও তা কমিয়ে ১৩ কোটি ৮৪ লাখ টনে নামিয়ে আনা হয়েছে। তবে আর্জেন্টিনায় উৎপাদন বেড়ে ২ কোটি ১০ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে। ইউরোপের কারণে যে ঘাটতি তৈরি হবে তা পুষিয়ে দেবে আর্জেন্টিনা।

গমের মজুদ পূর্বাভাসও কমিয়েছে ইউএসডিএ। মৌসুম শেষে মজুদের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৭ কোটি ৮৪ লাখ টনে। আগের পূর্বাভাসে ২৮ কোটি ১৫ লাখ টন মজুদের কথা বলা হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্ববাজারে অব্যাহতভাবে কমতে থাকা শস্যটির সরবরাহ দামকে ঠেলে সামনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) মাসভিত্তিক মূল্যসূচকে জানায়, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রে দুর্বল আবাদ পরিস্থিতির কারণে মার্চে গমের দাম প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছে।

পড়তে পারেন: গম ও ভুট্টা আমদানিতে ভারতের দিকে ঝুঁকছে আমদানিকারকরা

ইউরোপীয় ইউনিয়নের গম রফতানি কমে ৩ কোটি ৪০ লাখ টনে নামার প্রক্ষেপণ করেছে ইউএসডিএ। এর এক মাস আগে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টনের প্রক্ষেপণ করা হয়েছিল।

এদিকে মার্চ থেকে ইউক্রেনের গম রফতানি ১০ লাখ টন করে কমার পূর্বাভাস মিলেছে। মৌসুম শেষে রফতানির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ কোটি ৯০ লাখ টন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি পূর্বাভাস ২ কোটি ১৮ লাখ টন থেকে কমিয়ে ২ কোটি ১৪ লাখ টনে আনা হয়েছে।

অন্যদিকে ইউএসডিএ রাশিয়ার গম রফতানি পূর্বাভাস ১০ লাখ টন করে বাড়িয়েছে। সে হিসাবে রফতানির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩ কোটি ২০ লাখ টনে। ব্রাজিলের রফতানি আট লাখ টন বেড়ে ২৫ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে। ইউএসডিএ আর্জেন্টিনার গম রফতানি পূর্বাভাসও বাড়িয়েছে। আগের পূর্বাভাসের তুলনায় রফতানি পাঁচ লাখ টন বেড়ে ১ কোটি ৪৫ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে। লাতিন আমেরিকার দেশগুলো বিশেষ করে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে রফতানি বাড়লে তা কৃষ্ণ সাগরীয় অঞ্চল থেকে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা লাঘবে সহায়তা করবে।

ইউএসডিএ আরো জানায়, মৌসুম শেষে অস্ট্রেলিয়ার রফতানি ২ কোটি ৭৫ লাখ, কানাডার রফতানি ১ কোটি ৫৫ লাখ ও ভারতের রফতানি ৮৫ লাখ টনে পৌঁছবে। রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে সরবরাহ সীমিত হয়ে পড়ায় অস্ট্রেলিয়া ও ভারত শীর্ষস্থানীয় গম সরবরাহকারী হয়ে উঠছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ