খামারের দুধ নষ্ট অথবা

মো. জাহিদ হোসেন, স্বত্বাধিকার জারাহ্ এগ্রো, গাজিপুর, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: প্রিয় খামারি গরমে খামারের দুধ নষ্ট অথবা অবিক্রিত থাকলে যা করতে হবে তা তুলে ধরাবো। যাদের ডেইরি ফার্ম রয়েছে তাদের কখনো দুধ নষ্ট অথবা দুধ বিক্রি হয় নাই এমন কেউ আছেন বলে আমার মনে হয় না।

ধরুণ আপনার খামারের দুধ নষ্ট হয়ে গেছে। অথবা আবহাওয়া খারাপ দুধ কেনার কেউ নাই। তখন আপনি কী করবেন! সব দুধ ফেলে দিবেন? না কখনো ফেলে দিবেন না।

বরং সেই দুধ দিয়ে আপনার গাভী/ষাঁড়/বাছুরের জন্য ঔষধ তৈরী করে ফেলুন। আপনি এই দুধ দিয়ে যে ঔষধটি বানাবেন তাঁর পাউডার বিভিন্ন কোম্পানী করে থাকে এবং দাম শুনলে চোখ কপালে উঠবে।

৫০ কেজির বস্তার সর্বনিম্নমূল্য হচ্ছে ২৫ হাজার সর্বচ্চো ৩৫ হাজার টাকা ঔষধগুলোর নাম বললাম না।

আসুন ঔষধ বানানোর রেসিপিটা জেনে নেই পরে বলছি উপকারিতা: যদি বুঝতে পারেন আপনার দুধ নষ্ট হয়ে গেছে অথবা মিষ্টির দোকান হতে জানানো হলো দুধ নষ্ট। অবশ্যই দুধ ফেলতে নিষেধ করবেন।



এরপর যে পাত্রে দুধ রাখা ছিলো সেই পাত্রে বাতাস চলাচল বন্ধ করুন অর্থাৎ পাত্রের মুখ বন্ধ করে রেখে দিন। ঘন্টা পাঁচেক পর দেখবেন মজাদার টকদই হয়ে গেছে। এই দই আপনি ২ থেকে ৭ দিন রাখতে পারবেন।

বাছুর থেকে বড় গরু/গাভী সকলকে দৈনিক ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম করে ওই টক দই খাওয়ান। ২ থেকে ৩ দিনপর থেকে অবশ্যই দইটা (টকদই) ভালো আছে কিনা পরীক্ষা করে তারপর দিবেন।

এবার আমি যে উপকারিতা পেয়েছি তা বলছি: ১. পেটে গ্যাস হয় নাই (হবেই না)। ২. খাবারের রুচি বেড়েছে। ৩. দুধ উৎপাদন বাড়ছে (প্রমানিত ৫ থেকে ৬ বার একই রেজাল্ট)।

৪.এই গরমে গরু তুলনা মূলক কম হাঁপাবে (নিজের চোখের দেখা)। ৫.গরু ভালো অনুভব করে।

এই অবিক্রিত দুধ থেকে তৈরী হওয়া টক দই আসলে পৃথিবীর উন্নত মানের প্রোবায়োটিক যা গবাদির পশুর জন্য খুবই উপকারী সুতরাং খামারীদের দুধ নষ্ট হয়ে গেলে এখন আর এতো দুসচিন্তা না করলেও চলবে। দুধ নষ্ট হলে যদি কেউ এই পদ্ধতি তৈরী করে গরুকে খাওয়ায় তাহলে প্রত্যক্ষ ভাবে খামারীর লস হলে পরোক্ষভাবে খামারী আসলে লাভবান হবেন।

প্রিয় খামারিরা এগুলো সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। একাধিকবার ভালো ফল পেয়েছি বলেই বিষয়টি তুলে ধরলাম।

আরও পড়ুন: ডেইরী ফার্ম শুরুর আগে ও পরে যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া জরুরি

প্রিয় পাঠক খামারি জাহিদ হোসেনের অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করি। এ বিষয়ে ডা. ভবতোষ কান্তি সরকার, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার, যশোর, এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, জাহিদ হোসেন অভিজ্ঞতার আলোকে যেটা লিখেছেন তা ঠিক আছে।

ডা. ভবতোষ কান্তি সরকার এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, দুধে lactobacillus বেশী হলে, দুধ কেটে যায়। আর টক দই সবসময়ই রুচি বাড়ায় এবং গ্যাস কমায়।

খামারের দুধ নষ্ট অথবা অবিক্রিত থাকলে যা করতে শিরোনামের লেখক মোঃ জাহিদ হোসেন, ফার্মের নাম জারাহ্ এগ্রো, গাজিপুর পূবাইল।