আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি মৌসুমে রেকর্ড গম উৎপাদন করতে যাচ্ছে ব্রাজিল। অনুকূল আবহাওয়া ও পরিত্যক্ত অনাবাদি জমিতে গমের ভালো ফলন হওয়ায় উৎপাদন বাড়বে বলে জানিয়েছে ব্রাজিলের খাদ্য সরবরাহ ও পরিসংখ্যান সংস্থা ন্যাশনাল সাপ্লাই কোম্পানি (কোনাব)।

আদর্শ আবহাওয়ার ওপর দাঁড়িয়ে ২০২২-২৩ মৌসুমে রেকর্ড গম উৎপাদন করেছে ব্রাজিল। বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে প্রতিবেশী আর্জেন্টিনায়। মারাত্মক খরা ও অক্টোবর-নভেম্বরে অস্বাভাবিক তুষারপাতে আর্জেন্টিনার গম উৎপাদন সাত বছরের সর্বনিম্নে নেমে এসেছে।

৩২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ কৃষিজমি গম চাষের আওতায় আনার ফলে এ রেকর্ড উৎপাদন হচ্ছে। ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনায় গম কাটা শুরু হয়। পুরো ফসল তোলা হলে এ মৌসুমে ৪৫ কোটি ৬০ লাখ বুশেল বা ১ কোটি ২৪ লাখ টন গম উৎপাদনের আশা করছে দেশটির কৃষি বিভাগ।

গত ১০ বছরে আর্জেন্টিনার গম উৎপাদন ঊর্ধ্বমুখী হলেও এবার আশানুরূপ ফলন হয়নি লাতিন আমেরিকার দেশটির। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি কম হওয়া ও খরার প্রভাব পড়েছে গমের ফলনে। এবার একরপ্রতি গম উৎপাদন হয়েছে ৩০ বুশেল (হেক্টরপ্রতি দুই টন)। গত মৌসুমের চেয়ে উৎপাদন কমেছে ৪০ শতাংশ। চলতি মৌসুমে গমের ফলন ২০০৮ সালের সমান। ওই বছরে ২০ বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ খরায় পড়েছিল আর্জেন্টিনা।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

সর্বনিম্নে নেমেছে ভারতের গমের মজুদ, দাম বাড়তির আশঙ্কা

গমের ফলন বৃদ্ধিতে কয়েকটি আধুনিক প্রযুক্তি

রাশিয়ার রেকর্ড পরিমাণ গম উৎপাদনের আশা

বিশ্বের শীর্ষ গম রফতানিকারক আর্জেন্টিনায় কমবে গম উৎপাদন

আর্জেন্টিনার গম উৎপাদন যখন ধাক্কা খেয়েছে, তখন প্রতিবেশী ব্রাজিলের উৎপাদন চাঙ্গা। চলতি মৌসুমে ৩৪ কোটি ৯০ লাখ বুশেল বা এক কোটি টন গম পাওয়ার আশা করছে ব্রাজিল। গত মৌসুম থেকে দেশটি ২৪ শতাংশ অধিক গম উৎপাদনের আশা করছে। দেশটির মোট গম উৎপাদনের প্রায় ৯০ শতাংশই হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলীয় পারানা ও রিও গ্র্যান্ডে দো সোলে।

চলতি মৌসুমের বসন্ত ও শীতে অনুকূল আবহাওয়া ব্রাজিলের কৃষকদের জন্য উপকারী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। প্রতি একরে ৪৬ বুশেল বা হেক্টরপ্রতি ৩ দশমিক ১১ টন গম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। গত মৌসুমের চেয়ে যা ১০ শতাংশ বেড়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে একরপ্রতি ৪৫ বুশেলের অধিক গম উৎপাদন হয়েছে।

ব্রাজিল যখন রেকর্ড গম উৎপাদনের পথে এগোচ্ছে, তখন কৃষকরাও এ শস্যে অধিক মনোযোগ দেয়া শুরু করেছেন। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে খাদ্যশস্যের সরবরাহ চেইন যেভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে তা আমলে নিয়ে অধিক জমিতে গম চাষ করছেন কৃষকরা। গত মৌসুমের তুলনায় এবার ১২ শতাংশ অধিক কৃষিজমি গম চাষের আওতায় এসেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ৬০-৬৫ শতাংশ গম রফতানি করে আর্জেন্টিনা। গত বছর অভ্যন্তরীণ বাজারে ২৪ কোটি বুশেল বা ৬৪ লাখ টন গম বিক্রি হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ