অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: করোনা মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ- খরার কারণে বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদন ও রপ্তানিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। কিন্তু অন্যদিকে করোনা সমস্যা স্তিমিত হলেও রাশিয়া-ইউক্রেন নতুন সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। দুই দেশের যুদ্ধে গম-ভুট্টাসহ যাবতীয় খাদ্যশস্য রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া।

১৫ মার্চ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত গম, যব, ভুট্টা ও রাইসহ যাবতীয় খাদ্যশস্য রপ্তানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। গতকাল সোমবার রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী এ নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে রয়টার্স।

পড়তে পারেন: ভুট্টা ও গমের দাম বাড়ায় পশুখাদ্যে বাড়ছে ভাঙ্গা চাল

রাশিয়ার কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ইন্টারফ্যাক্সকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে একটি সরকারি ডিক্রির খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ১৫ মার্চ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো খাদ্যশস্য রপ্তানি করা হবে না। খুব শিগগির এ ডিক্রি কার্যকর করা হবে।’

এদিকে বিশ্বের শীর্ষ গম রপ্তানিকারী দেশটির এ সিদ্ধান্ত সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হওয়া মাত্রই ইউরোপে বাড়তে শুরু করেছে গমের দাম। প্যারিসভিত্তিক সংস্থা ফ্রন্ট-মান্থ মের তথ্যানুযায়ী, ইউরোপে এর মধ্যেই প্রতি টন গমের দাম বেড়েছে এক দশমিক ৮ শতাংশ।

পড়তে পারেন: বাজারে গমের দাম ১৪ বছরে সর্বোচ্চ

ইউরোপের এক খাদ্যশস্য ব্যবসায়ী এ বিষয়ে রয়টার্সকে বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খরা ও মহামারির কারণে এমনিতেই গত বছর বিশ্বজুড়ে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে, ফলে বাজারে খাদ্যশস্যের দাম চড়া। এখন রাশিয়া যদি সত্যিই এমন সিদ্ধান্ত নেয়, সে ক্ষেত্রে বাজারের চেহারা বদলে যাবে।’

‘আমরা আশা করছি রপ্তানিবিষয়ক পুরনো যে চুক্তিগুলো আছে, সেসব সচল রাখবে রাশিয়া। যদি তা না রাখে, সে ক্ষেত্রে বিশাল বিপর্যয় ঘটবে।’

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা, ইউক্রেনে রুশ অভিযান কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক যেসব নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, সেসবের জবাব দিতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।

পড়তে পারেন: দেশে বছরে ৫৭ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদন

তবে অনেকে বলছেন, অভ্যন্তরীণ খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এ উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে রুশ সরকার। এ ক্ষেত্রে উদাহারণ হিসেবে বলা যায়, গত সপ্তাহে সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রগুলোতে খাদ্যশস্য রপ্তানি স্থগিত করেছে রুশ সরকার। আগামী আগস্ট পর্যন্ত এ স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে।

উল্লেখ্য, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। এ অভিযানের অংশ হিসেবে স্থল, আকাশ ও পানিপথে ইউক্রেনে হামলা চালানো হচ্ছে। অভিযান শুরুর পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনীও প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে। আজ যুদ্ধের ২০তম দিন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ