অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: খাদ্যশস্য ও সূর্যমুখী তেল রফতানিতে শুল্ক ফর্মুলায় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে রাশিয়া। ২৯ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত প্রতি টন গম রফতানিতে ১৪৬ ডলার ১০ সেন্ট করে শুল্ক আরোপ করেছে মস্কো। এছাড়া ধীরে ধীরে ডলারের পরিবর্তে রুবলে শুল্ক আদায়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে চায় দেশটি।

রুবলের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও রফতানি বাড়াতে উৎসাহিত করার জন্য এমনটি করা হয়েছে। রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

আজ থেকে রাশিয়ায় খাদ্যশস্যের নতুন বিপণন মৌসুম শুরু করেছে। এ মৌসুমে উচ্চ রফতানি শুল্কের কারণে প্রত্যাশিত রফতানি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি ঊর্ধ্বমুখী রুবল, জাহাজীকরণ সংক্রান্ত সমস্যা ও নিষেধাজ্ঞার কারণে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে বিক্রি কমে যাওয়াও রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যদিও খাদ্য ও কৃষিপণ্য এবং চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ খাতকে নিষেধাজ্ঞামুক্ত রেখেছে পশ্চিমা দেশগুলো।

পড়তে পারেন: নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ১৮ লাখ টন গম রফতানি ভারতের

রাশিয়া ২০২১ সালের জুনে খাদ্যশস্য রফতানির ক্ষেত্রে ফর্মুলাভিত্তিক শুল্ক চালু করে। স্থানীয় বাজারে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যেই নতুন পদ্ধতির যাত্রা হয়। কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের দেয়া মূল্যনির্দেশক ব্যবহার করে শুল্কের আকার নির্ধারণ করে।

মন্ত্রণালয় জানায়, শুল্ক ফর্মুলায় পরিবর্তন আনলে রফতানি শুল্কের আকারের ওপর রুবল-ডলার বিনিময় হারের ঊর্ধ্বমুখী গতি কমে আসবে। ফলে রফতানিতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়বে। অন্যদিকে স্থানীয় বাজারে খাদ্যশস্য ও তেলবীজের দামও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। তবে নতুন ফর্মুলা ঠিক কেমন হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত জানায়নি মন্ত্রণালয়।

রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ গম রফতানিকারক দেশ। সূর্যমুখী তেলবীজ রফতানিতেও দেশটি নেতৃস্থানীয়। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞায় দেশটির অর্থব্যবস্থা জর্জরিত। অন্যদিকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের দাম আকাশচুম্বী। এতে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে অনুন্নত ও স্বল্প উন্নত দেশগুলো, বিশেষ করে যেসব দেশ কৃষ্ণ সাগরীয় অঞ্চলের খাদ্যশস্য আমদানির ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল।

পড়তে পারেন: গম উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়বে রাশিয়া

২৯ জুনের আগ পর্যন্ত (২২-২৮ জুন) প্রতি টন গম রফতানিতে ১৪২ ডলার করে শুল্ক দিতে হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত এ শুল্কহার রুবলে পরিবর্তন করলে শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ হাজার ৫৬৮ দশমিক ১০ রুবল। তবে রফতানি শুল্ক ডলার থেকে রুবলে পরিবর্তন সংক্রান্ত কোনো চুক্তি অথবা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি।

শিল্পসংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, ব্যবসায়ীরা রাশিয়ার সরকারের কাছে গমের রফতানি শুল্কের ম্যাকানিজম পরিবর্তনের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ব্যবসায়ীদের দাবিকে বিবেচনায় নিয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে মস্কো।

সরকারি একটি সূত্র বলছে, গম ও সূর্যমুখী তেলবীজের রফতানি শুল্কের ম্যাকানিজম আধুনিকায়নের মাধ্যমে মুনাফা সক্ষমতা সংরক্ষণ করা যাবে। পাশাপাশি কৃষকদের বিনিয়োগ বাড়াতেও উৎসাহিত করবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ