নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ‘জাটকা ধরে করবো না শেষ, বাঁচবে জেলে হাসবে দেশ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) হতে শুরু হচ্ছে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০১৮। সপ্তাহব্যাপী এ কর্মসূচি ২ মার্চ পর্যন্ত চলবে।

আজ ২২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) মৎস্য ভবনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে মাছের মোট উৎপাদন হয়েছে ৪১.৩৪ লক্ষ মে.টন, যার প্রায় ১২ শতাংশই হলো ইলিশ। দেশের জিডিপিতে স্বাদে, গন্ধে সবার সেরা ইলিশমাছের অবদান ১ শতাংশ। প্রায় ২৫ লক্ষ লোক ইলিশমাছ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর, বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ এর ভৌগলিক নিবন্ধন প্রদান করেছে। বাংলাদেশ ইলিশ শীর্ষক ভৌগলিক নিবন্ধন সনদ (জিআই সনদ) প্রাপ্তিতে এবার নিজস্ব পরিচয় নিয়ে বিশ্ববাজারে হাজির হবে বাংলাদেশের ইলিশ। মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিশ্বে উপস্থাপিত হবে ইলিশের দেশ হিসেবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমান সরকারই সর্বপ্রথম মা-ইলিশসংরক্ষণ অভিযানের সময় জেলেদের ভিজিএফ সহায়তাপ্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং বিগত দুইবছরে মোট ১৪ হাজার ৮২৪ মে.টন চাল বিতরণ করে।

মন্ত্রী জানান, ইলিশ সম্পদের উন্নয়নে প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বিদ্যমান আইনসংশোধন করে জাটকা-আহরণের নিষিদ্ধসময় নভেম্বর হতে জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি এবং জাটকার দৈর্ঘ্য ২৫ সেন্টিমিটার করা হয়েছে। জাটকা সংরক্ষণে বর্তমান সরকার বিগত নয় বছরে মোট ২ লাখ ৩৪ হাজার ৭৫৭ মে.টন খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছে, যা বিগত ২০০৪-০৫ হতে ২০০৭-০৮ পর্যন্ত চার বছরে বিতরণ করা হয়েছিল মাত্র ৬ হাজার ৯০৬ মে.টন চাল।

মন্ত্রী জানান, ইলিশের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন না পাওয়ার অন্যতম প্রধানকারণ হচ্ছে কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য অবৈধজাল দিয়ে নির্বিচারে জাটকানিধন। তাই জাটকাসহ অন্যান্য মৎস্যসম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জালনির্মূলে চলতিবছরের জানুয়ারি মাসের ১৫ হতে ৩০ তারিখ পর্যন্ত বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় ‘সম্মিলিত বিশেষ অভিযান’পরিচালিত হয়।

এ অভিযানের ফলে দশজেলায় মোট ৩৪১টি মোবাইল কোর্ট ও ৯৩৫টি অভিযানপরিচালনা করে ১৪৪২টি বেহুন্দি জাল, ৩৪.০৪ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল এবং ২১০৫টি অন্যান্য জাল আটকসহ ৩.৩৫ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।