নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গরিব জেলেদের জেল জরিমানার পরিবর্তে জাল উৎপাদক, সরবরাহকারী, দাদনদার, দালাল ও জোতদারদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বক্তারা।

১৬ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত জাতীয় মৎস্য সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০১৯ এর শেষদিনে সমাপনী ও মূল্যায়ন সভায় বক্তারা এসব গুরুত্বারোপ করেন।

মৎস্য অধিদফতরের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।

সভায় প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রণালয়সহ অধিনস্থ সকল দফতরের কার্যক্রমসহ কাজের মানবৃদ্ধি ও গতি ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দিয়ে বলেন, জাটকাসহ অন্যান্য মাছের সংরক্ষণে সকল প্রকার জালের মূলোৎপাটন করতে হবে।

সভায় জানানো হয়, সপ্তাহজুড়ে ১,১২০টি মোবাইলকোর্ট ও অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে ১৮টন জাটকাসহ অন্যান্য মাছ জব্দ করা হয়।

এছাড়াও ১১ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৫৬ লাখ মিটার জাল আটকের পাশাপাশি প্রায় ৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায়, ১০৩টি মামলা দায়েরসহ ১০৩ জনকে জেলে পাঠানো হয়। এছাড়াও রাজধানীতে ৬,৩০০ কেজি জাটকা জব্দের পর তা ১১২টি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়। সপ্তাহ চলাকালে ঢাকা মহানগরীরতে জাটকাবিরোধী ১০টি অভিযান পরিচালিত হয়।

অন্যদিকে নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত ৮ মাসব্যাপী নিয়মিত জাটকা নিধনরোধের অংশ হিসেবে ফেব্রুয়ারি মাসে ৫,৫১১টি মোবাইলকোর্ট ও অভিযান চালিয়ে ২৩কোটি ৬৬লাখ টাকার প্রায় ৭১টন জাটকাসহ অন্যান্য মাছ জব্দের পাশাপাশি প্রায় দেড় কোটি মিটার জাল আটক করা হয়। এসময় সাড়ে ১০লাখ টাকা জরিমানাসহ ২২৮টি মামলায় ৭৭ জনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

মৎস্য অধিদফতরের ডিজি আবু সাইদ মো. রাশেদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মূল্যায়ন সভায় অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মণ্ডল, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) সুবল মনি বোস ও ইলিশ ব্যবস্থাপনাশাখার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মাসুদ আরা মমি বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন: মাছের খামার করতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক

প্রতিমন্ত্রী ধৃত জাটকা মাছ যেমন এতিমখানায় দেয়া হয়, তেমনই ধৃত জাল পুড়িয়ে ফেলে জাতীয় সম্পদ ধ্বংসের বদলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ভুক্ত প্লাস্টিকপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্টে কাঁচামাল হিসেবে সরবরাহ করার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীসহ কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান।

জেলেদের জেল জরিমানার পরিবর্তে জাল উৎপাদক, সরবরাহকারীদের শাস্তির আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, শুধু নিরহ জেলেদের ওপর সব সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না। বরং যারা এসব জাল উৎপাদন থেকে শুরু করে অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন করছে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ইনফরমেশন অফিসার মোঃ শাহ আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।