ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: পাকা টমেটো ছোট বড় সকলের পছন্দনীয়। বিশেষ করে সালাত হিসেবে বেশি খাওয়া হয়। তবে এ ফসলের রোগ বালাই খুব বেশি। চাষিরা বেশ বেকায়দায় পড়েন রোগ-বালাই নিয়ে। চাষিদের জন্য গবেষণা করে প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। টমেটোর পাতায় জিংক ও বোরন প্রয়োগে ফলন হয় প্রায় দ্বিগুণ।

জিংক ও বোরন সার পাতায় সিঞ্চণ প্রয়োগে (Foliar spray) টমেটো চাষ পদ্ধতি

মাটিতে অনুপুষ্টির অভাবে টমেটোর ফলন অনেক কম হয়। পর্যাপ্ত পরিমান ইউরিয়া, টিএসপি এবং এমওপি সার ব্যবহার করলেও পরিমিত পরিমান অনুপুষ্টি সার ব্যবহার না করলে বেশী ফলন আশা করা যায় না। অনুপুষ্টি সার বিশেষ করে জিংক ও বোরন সার সিঞ্চণ আকারে টমেটো গাছে প্রয়োগ করলে ফলন বৃদ্ধি সম্ভব।

মৃত্তিকা অণুপুষ্টি শাখা ২০১৪-২০১৫ ও ২০১৫-২০১৬ মৌসুমে গবেষণা করে অত্র প্রযুক্তিটি উদ্ভাবন করেছে ।

পড়তে পারেন: ৭৫ শতাংশ জমিতে ৫ লাখ টাকার টমেটো বিক্রির আশা আলীমের

অঞ্চলঃ গাজীপুর (AEZ–২৮)
মাটিঃ সুনিষ্কাশিত দোঁয়াশ মাটি উত্তম।
বীজের হারঃ হেক্টার প্রতি ২০০-২৫০ গ্রাম
বীজ বপনের সময়ঃ মধ্য আগষ্ট-মধ্য অক্টোবর
চারা রোপনের সময়ঃ মধ্য নভেম্বর-মধ্য ডিসেম্বর
শস্য: টমেটো
জাত: বারি টমেটো -১৫

পড়তে পারেন: ইতালিয়ান টমেটো চাষে তাক লাগিয়েছেন মাসুদ

সারের পরিমাণ:

সারের নামসারের পরিমাণ/হেক্টর)
ইউরিয়া২৫০-৩০০ কেজি
টিএসপি২০০-২৫০কেজি
এমওপি১৭৫-২০০কেজি
জিপসাম৯০-১০০কেজি
গোবর২টন

সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ অর্ধেক গোবর ও টিএসপি ও জিপসাম সার শেষ চাষের সময় জমিতে ছিটিয়ে দিতে হয়। অবশিষ্ট গোবর চারা লাগানোর পূর্বে গর্তে প্রয়োগ করতে হয়। ইউরিয়া ও এমওপি ২ কিস্তিতে পার্শ্বকুশি ছাঁটাইয়ের পর চারা লাগানোর ৩য় ও ৫ম সপ্তাহে রিং পদ্ধতিতে প্রয়োগ করতে হয়।

পড়তে পারেন: ৩ বিঘায় ৩ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি

সিঞ্চণ প্রয়োগঃ জিংক সালফেট-হ্যাপ্টা হাইড্রেট ( ২৩% জিংক ) ০.০৫% হারে এবং বোরিক এসিড ( ১৮% বোরন ) ০.০৩% হারে গাছে ১) ফুল আসার আগে, ২) ফল ধরার ১৫ দিন পর এবং ৩) ২য় প্রয়োগের ২০ দিন পর পাতায় সিঞ্চণ প্রয়োগ করতে হবে। প্রতিবার ৩০০ মি.লি. দ্রবণ প্রয়োগে প্রতিটি টমেটো গাছকে সম্পূর্ণভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। সূর্যাস্তের পূর্বে অথবা পড়ন্ত বিকালে স্প্রে করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন সিঞ্চণের পূর্বে পাতা ভেজা না থাকে। প্রখর সূর্যালোকে স্প্রে করা যাবে না।

পড়তে পারেন: টমেটোর ৪ ধরণের রোগবালাই ও দমন ব্যবস্থাপনা

অর্ন্তবর্তীকালীন পরিচর্যাঃ১ম ও ২য় কিস্তির সার প্রয়োগের পূর্বে পার্শ্বকুশিসহ মরা পাতা ছাটাই করে দিতে হয়। এতে রোগ পোকার আক্রমন কম হয় এবং ফলের আকার বড় হয়। সেজন্য টমেটো গাছে ‘A’ আকৃতির ঠেকনা দেওয়ার জন্য বাঁশের তৈরী কাঠি, ধৈঞ্চার কাঠি, বাঁশের কঞ্চি, ডাল ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। ফসলের নিবিড় যত্ন যেমন- আগাছা দমন, সার প্রয়োগ, পানি সেচ, নিষ্কাশন, আস্তরণ ভেঙ্গে দেওয়া এবং মাটি ঝুরঝুরে রাখা আবশ্যক।

টমেটোর পাতায় জিংক ও বোরন প্রয়োগে ফলন দ্বিগুণ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। লেখাটি কৃষি প্রযুক্তি ভান্ডার থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ