করোনা ভ্যকাসিন। ছবি: এএফপি

ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪কম: তৃতীয় ধাপ পরীক্ষার আগেই আসতে পারে ভারতের টিকা। ভারতের স্বাধীনতা দিবসে করোনা ভ্যাকসিন আসবে বলে হইচই ফেলে দিয়েছিল ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)।

আর এই সুখবর দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটির খোদ ডিজি বলরাম ভার্গব।এক পাতার একটি সরকারি চিঠিতে এসব জানানোর পর ভারতজুড়ে তোড়জোড় বাধলেও কাজের বেলায় কিছুই হয়নি। তাই স্বাধীনতা দিবসে কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক আবিষ্কারের সুখবর দিতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!

সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রের দাবি, আইসিএমআর-এর ডিজি জানান, দেশে তৈরি দু’টি সম্ভাব্য প্রতিষেধকের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল প্রায় শেষ। সাধারণত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হতে ন্যূনতম ৬ থেকে ৯ মাস লাগে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে জরুরি ভিত্তিতে (ইমার্জেন্সি অথরাইজ়েশন) ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ভাবতে পারে।

করোনার টিকা নিয়ে আশ্বাসের কারণে মোদি সরকার ভোট বাড়ানোর রাজনীতি করছে কি না এমন প্রশ্নও উঠেছে। কারও কারও বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতিতে বেহাল অর্থনীতি নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা হয়েছে মোদী সরকারের। এখন টিকা বাজারে আসার বিষয়ে নির্দিষ্ট আশ্বাস মিললে শেয়ার বাজার চাঙ্গা হবে। লগ্নিকারীদের মনোবল বাড়বে। অক্টোবর-নভেম্বর থেকে আগামী বছরের শুরু পর্যন্ত উৎসবের মরসুম। তার আগে সত্যিই কোনও সুখবর এলে বিক্রিবাটা বাড়বে। জোরদার হবে বাজার।

আরোও পড়ুন: করোনা হয়েছে, জ্বর নেই, উপসর্গও নেই! করণীয় কি?

দ্বিতীয়বার করোনা আক্রান্তের সম্ভাবনা আছে কি? চিকিৎসকরা কি বলছেন?

এ সব প্রশ্ন ওঠার কারণ একটাই— তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এতে দেড়-দু’হাজার মানুষের উপরে সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের প্রভাব পরীক্ষা করা হয়। খতিয়ে দেখা হয় দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও। অনেকেরই বিস্মিত প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ তো রাশিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ!’’ গত ১১ অগস্ট রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন, করোনার প্রতিষেধক তৈরি করে ফেলেছেন তাঁরা। নাম ‘স্পুটনিক ভি’। কিন্তু ঘণ্টা কয়েক পরে এক রুশ মন্ত্রীর বিবৃতিতে জানা যায়, তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল তখনও শুরু হয়নি। অর্থাৎ ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই ভ্যাকসিনটির নথিভুক্তির ছাড়পত্র দিয়ে ফেলেছে রুশ সরকার। যদিও ওই ভ্যাকসিনের নির্মাতা গামালিয়া ইনস্টিটিউটের এক ডিরেক্টর আজ জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে রাশিয়ার ৪৫টি কেন্দ্রে ৪০ হাজার মানুষের উপরে ‘স্পুটনিক ভি’ পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হবে। বিদেশি গবেষকদের নজরদারিতেই তা করা হবে।

সম্প্রতি ভারতে তৈরি করোনা প্রতিষেধক প্রথম পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালের ফলাফল সামনে এসেছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ফলাফল যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক! দ্বিতীয় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, দু’টি পর্যায়ে মোট ১,১০০ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর এই ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হবে। এই ট্রায়ালের জন্য হায়দরাবাদের নিজাম ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস, দিল্লি ও পটনার AIIMS-সহ মোট ১২টি প্রতিষ্ঠানকে বেছে নিয়েছে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ’ (ICMR)।

তৃতীয় ধাপ পরীক্ষার আগেই আসতে পারে ভারতের টিকা শিরোনামে সংবাদের তথ্য আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে নেওয়া হয়েছে।