সাদিকুর রহমান, হাবিপ্রবি, প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মানুষ শারীরিকভাবে অসুস্থ হলে কত ভাবেই না চিকিৎসা হয়! চিকিৎসকের কাছে যাওয়া, ঔষধ খাওয়া, অস্ত্রপচার করা ইত্যাদি। কিন্তু পশুপাখি অসুস্থ হলে তার জন্য আমরা কী করি!
অথচ এ পশুপাখি আমাদেরকে কত ভাবে সহযোগিতা করে। পশুরা দুধ দেয়, যা আদর্শ খাবার হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই বিবেচিত হয়ে আসছে, সাথে দেয় সুস্বাদু মাংস। পাখিরা ডিম দেয় ও মাংস দেয়। এতকিছুর পরও আমাদের দেশে পশুপাখির জন্য তেমন কিছু করা হয় না।
পশুপাখি অসুস্থ হলে তাদের জন্য গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তার ছাড়া আর কিছু করা হয় না। হাতুড়ে ডাক্তাররা যদি পশুপাখিকে সুস্থ করতে পারে তো ভাল, অন্যথায় সেই পশুর ভাগ্যে চলে আসে মৃত্যু।
কিন্তু যদি পশুর জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়, পশুর জন্য যদি করা হয় পশু চিকিৎসালয়, তবে সেটি যেমনি ভাবে পশুর প্রতি দয়া করা হয়, তেমনি মানুষও উপকৃত হয়। এতে পশুপাখি সুস্থ থাকে ফলে তাদের শারিরীক বৃদ্ধি দ্রুত হয়। এতে মূলত মানুষই উপকৃত হয়।
এমনই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ভেটেরিনারী এন্ড এনিমেল সায়েন্স (পশুচিকিৎসা এবং পশু বিজ্ঞান) অনুষদ।
এই অনুষদে গবাদিপশুর রোগবালাই, জাত উন্নয়ন ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা হয়। এই অনুষদের অধীনে পরিচালিত হয় “ভেটেরিনারী টিচিং হসপিটাল”। এই হাসপাতালে কৃষকদের গবাদিপশুর চিকিৎসা করা হয়।
সম্প্রতি একটি বাছুরের মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। বাছুরটির “হাইড্রোসেফালাস (জন্মগত ত্রুটি)” ছিল। ভেটেরিনারী এন্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মো. ফজলুল হক বলেন, ‘বাছুরটির মাথার খুলির সামনের অংশের বাইরে ছিদ্র হয়েছিল এবং সেখানে বিভিন্ন রকম ফ্লুইড (তরল) জমা হয়েছিল।
এই অস্ত্রোপচারটি করেন অনুষদের সাতজন শিক্ষক-শিক্ষিকা। সেখানে নেতৃত্ব দেন মেডিসিন, সার্জারি এন্ড অবস্ট্রেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান ও অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মো. ফজলুল হক। তার সাথে সহযোগীতা করেন মেডিসিন, সার্জারি এন্ড অবস্ট্রেটিক্স বিভাগের ড. ফাতেমা জোহরা, ড. উম্মে কুলসুম রীমা, ড. সাইফুল ইসলাম, ড. মো: ফারুক ইসলাম, ডা. সাজেদুর রহমান, ডা. সোগরা বানু জুলি।
এই রোগের কারণ সম্পর্কে ডা. ফজলুল হক বলেন, “জন্মের পূর্বে (মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায়) মাথার খুলিতে আঘাত লাগা থেকে এমন হতে পারে অথবা কোন কারণে মাথায় ছিদ্র থাকলে এই ‘হাইড্রোসেফালাস (জন্মগত ত্রুটি)’ হতে পারে। ডা. সোগরা বানু জুলি বলেন, বাছুরটির মাথায় যে ফ্লুইড (তরল) জমেছিল তার ওজন প্রায় ১৫০০ গ্রাম। অস্ত্রপচার করে ৬০ শতাংশ ফেলে দেওয়া হয়েছে।
অস্ত্রপচারের আগে দেখলে মনে হত বাছুরটি মাথায় কি যেন নিয়ে আছে। অস্ত্রপচার সম্পন্ন হলে বাছুরটিকে স্বাভাবিক দেখা যায়।