পোল্ট্রি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ব্রাহমা মুরগি সাধারণ মুরগি থেকে বড় প্রজাতির। এই মুরগি ৮ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। বাংলাদেশে মাংসের চাহিদা বিবেচনায় ব্রাহমা জাতের মুরগি পালন লাভজনক হতে পারে।

কিছু কিছু প্রাপ্ত বয়স্ক বড় আকারের পুরুষ ব্রাহমা ৮ কেজির মত হয় এবং প্রাপ্ত বয়স্ক স্ত্রী মুরগি ৬ কেজি হয়ে থাকে। তবে এদের গড় ওজন মোরগ ৫.৫ কেজি এবং মুরগির ৪.৫ কেজি। ব্রাহমা মুরগির ডিমও সাধারণ মুরগির থেকে বড় হয় ও বাদামী রঙের হয়। একেকটি ডিমের গড় ওজন হয় ৫৫-৬০ গ্রাম।

পড়তে পারেন: নতুন দেশি মুরগি উদ্ভাবন, ৮ সপ্তাহে কেজি

চীনের সাংঘাই থেকে সর্ব প্রথম আমেরিকা ব্রাহমা মুরগি তাদের দেশে নিয়ে যায় এবং ব্রাহমা মুরগির জাত নিয়ে কাজ শুরু করে। খুব দ্রুতই সফলতা অর্জন করে। এর ফলে চীনের ব্রাহমা থেকে আমেরিকার উদ্ভাবিত ব্রাহমার প্রজাতিটি আকারে এবং ওজনে বড় হয়ে থাকে। ব্রাহমা মুরগির আদি নিবাস নিয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক আছে।

আমেরিকাতে যখন প্রথম ব্রাহমা মুরগি আনা হয় তখন তাকে সাংহাই মুরগি বলা হতো। সব থেকে বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, ব্রাহমা মুরগিকে উন্নত করার জন্য বাংলাদেশের চট্টগ্রামের এক বিশেষ প্রজাতির মুরগিকে ব্যবহার করা হয়। এর ফলে ব্রাহমার মুরগির আকার ও ওজনে এক বিশাল পরিবর্তন আসে।

পড়তে পারেন: দেশে এলো নতুন জাতের মুরগি, ৪৫ দিনে ১ কেজি!

আমেরিকায় সাধারণত ৩ রঙের ব্রাহমা দেখা যায়। সাদা, ধূসর ও সোনালি রঙের। সাদা জাতের ব্রাহমার শরীরের বেশিরভাগ অংশ সাদা হয়। ঘাড় থেকে পিঠ পর্যন্ত কালো ছোপ ছোপ থাকে এবং লেজের অংশটা কলো হয়। ধূসর রঙয়ের ব্রাহমা মুরগি পুরো শরীর ধুসর বা কিছুটা ছাই রঙয়ের হয়।

মাথা থেকে গলা পর্যন্ত হয় সাদা রঙয়ের। লেজের শেষ অংশ কালো রঙ্গের হয়। (সোনালি রঙের ব্রাহমার পুরো শরীরটা সোনালি রঙের। ঘাড় থেকে গলা পর্যন্ত কাল ছোপ ছোপ আছে। এবং লেজের শেষ অংশ কালো ব্রাহমা মুরগি আমাদের দেশীয় আবহাওয়াতে খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারবে। কারণ ব্রাহমা মুরগি গরম বা ঠান্ডা যে কোন আবহাওয়াতে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।

পড়তে পারেন: এলো নতুন ব্রয়লার মুরগি, ২৭ দিনে ২ কেজি!

বাংলাদেশে আবহাওয়াতে এদের বাণিজ্যিকভাবে পালন সম্ভব। অনেকেই ইতোমধ্যে ব্রাহমা মুরগি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন, তবে সেটার পরিমান খুবই কম। পোলট্রি শিল্পের সাথে জড়িত ব্রিডার ও খামারিরা এই মুরগি পালনের প্রতি আগ্রহী হলে দেশে যেমন মাংসের চাহিদা মিউবে তেমনি লাভের মুখ দেখবে খামার পর্যায়ে থাকা মানুষগুলোও।

ব্রাহমা মুরগি আসলে কয়েকটি উদ্দেশ্যে পালন করা হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে এদেরকে সৌখিনভাবে পালন করতেই বেশি দেখা যায়। এরা দেখতে খুব সুন্দর, আকর্ষনীয় ও বড় আকারের পাখি। যখন এরা দাঁড়িয়ে থাকে তখন এদের বেশ বড় ও দীর্ঘ মাথা দেখা যায়। এদের দেহ ঠিক যেন ইংলিশ এ অক্ষরের মতো।

পড়তে পারেন: দেশী মুরগির কেজি ৪০০, ব্রয়লার ১৭০

ব্রাহমা জাতের মুরগি বেশ বড়, সুশৃঙ্খল এবং হালকা ডাকাডাকি করা একটি পাখি। এরা বেশ লম্বা সময় ধরে ডিম দেয় এবং এদের ডিমের সাইজ বেশ বড়। যদিও অন্যান্য জাতের মুরগি তুলনায় এরা কম ডিম দেয়। এরা বেশ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং দেখতে খুব সুন্দর হয়।

ঢাকার কাপ্তান বাজারে প্রতি শুক্রবার সকাল ৭ থেকে বিকাল ৫ টা পর্স্ত মোরগ-মুরলির হাট বসে। এখানে পেয়ে যাবেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিক্রি করতে আসা ব্রাহমাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মুরগি। নরসিংদীর ঘোড়াশাল ও পলাশে ব্রাহমা জাতের মুরগি পাওয়া ঘাবে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় খোঁজ নিয়ে পেতে পারেন এই মুরগি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ