আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী): রাজশাহীর বাঘায় ভরা বর্ষা মৌসুমে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেনা চাষিরা। খাল-বিলে পানি না থাকায় বিপাকে পড়েছে উপজেলায় ৪ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করা চাষি।

এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে খরচ হচ্ছে ২২-২৪ হাজার টাক। উৎপাদন হচ্ছে ৮-১০ মণ। বিক্রি হচ্ছে ২১ হাজার থেকে ২৩ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি লোকশান হচ্ছে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা।

তবে এরমধ্যে লিজ নিয়ে যারা পাট চাষ করেছেন তাদের বিঘা প্রতি প্রায় ৪-৫ হাজার টাকা লোকশান হচ্ছে। লোকশানের জেনেও উপজেলার মাঠে মাঠে পাট কাটা, জাগ দেয়া, আশ ছুড়ানো এবং শুকানোর মধ্যদিয়ে সময় পার করছেন চাষিরা। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে বিভিন্ন হাট-বাজারে মানভেদে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায়।

পড়তে পারেন: পাট চাষে বিঘায় খরচ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার

এ বিষয়ে পাট চাষি বিপ্লব হোসেন বলেন, এক বিঘা জমিতে তিনবার চাষ করতে এক হাজার, দুই বার সেচ দিতে দুই হাজার টাকা, বীজ ও সার বাবদ দুই হাজার, দুই বার নিড়ানী বাবদ তিন হাজার টাকা, কাটা ও জাগ দিতে সাত হাজার টাকা, জাগ দিতে পুকুর লিজ খরচ দুই হাজার টাকা, আশ ছোঁড়ানো খরচ সাড়ে তিন হাজার টাকা, পরিবহন খরচ দুই হাজার টাকা, অন্যান্য খরচ দুই হাজার টাকাসহ মোট ২৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

বুধবার উপজেলার দিঘা হাটে পাট বিক্রি করতে আসেন দিঘা গ্রামের মকুল হোসেন। তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে লাঙ্গল, বীজ সেচ, কাটা, পরিস্কার করা, সারসহ যাবতীয় খরচের চেয়ে এক থেকে দুই হাজার টাকা প্রতি বিঘাতে লোকশান হচ্ছে।

পড়তে পারেন: পাট নিয়ে বিপাকে উত্তরাঞ্চলের চাষিরা

এ বিষয়ে চকরাজাপুর চরের পাট চাষী আমিরুল ইসলাম বলেন, পাট জাগ দেওয়ার পানি না থাকায় ও শ্রমিকদের অনেক বেশি মজুরি দিতে হচ্ছে। এবার পাট চাষ করে লোকসান গুণতে হচ্ছে।

পাট ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় পাটের মান ভালো না হওয়ার দাম তুলনামূলক কম পাচ্ছে চাষিরা।

পাট সংরক্ষণকারী দিঘা গ্রামের ব্যবাসায়ী আজিজুল হোসেন বলেন, বাজারে পুরোপুরি পাট উঠতে শুরু করেনি। দুই/এক সপ্তাহের মধ্যে উঠতে শুরু করবে। তবে দাম আরও বাড়বে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বর্তমান বাজারে পাট ব্যবসায়ীরা পুরোপুরি পাট কিনতে শুরু করলে দাম আরও বাড়বে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ