কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু, বাকৃবি থেকে, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বাংলাদেশে পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া মাছের কম খরচে উৎপাদন বৃদ্ধি, মাছের খাবারের গুণগত মান ঠিক রাখা, স্বাদ বৃদ্ধি এবং সেই সাথে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ওপর ‘আপগ্রেডিং পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া ভ্যালু চেইন ইন বাংলাদেশ’ বিষয়ে দিনব্যাপী  কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ডেনিস ইন্টারন্যাশন্যাল ডেভলাপমেন্ট এজেন্সির অর্থায়নে ব্যাংফিসের ওর্য়াক প্যাকেজ-৩ ওই কর্মশালার আয়োজন করে।

কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায়ে প্রধান অতিথি ছিলেন বাকৃবি উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জসিমউদ্দিন খান

ব্যাংফিস ওর্য়াক প্যাকেজ-৩ এর কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর বদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে এমিরিটাস অধ্যাপক ড. এম.এ. সাত্তার মন্ডল, বিশেষ অতিথি হিসেবে কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সবুর, ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোলজি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নেইলস ও  জি. জরজেনসেন উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, মাৎস্যবিজ্ঞান ও কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বাবিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের কনসালটেন্ট প্রফেসর ড. সুলতান মাহমুদ। ব্যাংফিসের ওর্য়াক প্যাকেজ-৩ এর টিম লিডার ও কৃষি অর্থসংস্থান বিভাগের অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামন খান কর্মশালায় ৫ বছর মেয়াদী ডানিডা’র আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি প্রকল্পের ২০১৫ থেকে অদ্যাবধি অর্জিত সাফল্য ও অগ্রগতির উপর একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।

কর্মশালায় অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামন খান বলেন, পাঙ্গাস ও তেলাপিয়ার তৈরী বহুবিধ খাদ্য তৈরী করে দেশ, বিদেশের ভোক্তাদের মাঝে পরিবেশন করতে হবে।

তিনি বলেন, পাঙ্গাস ও তেলাপিয়ার ক্রেতা দেশের সকল মহল। যখন প্রথম আমাদের দেশে প্রজাতি দুটি ব্যাপ্তি ঘটে তখন চাহিদা ও মূল্য অনেক বেশি ছিলো।

‘কিন্তু ক্রমেই তার বাজার আজ বিভিন্ন কারনে ধসের মুখে। পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া চাষে কম শ্রমিক ও কম খরচ প্রয়োজন হয়। অল্প পুঁজি ও অল্প সময়ে বাজারপুযোগি করা সম্ভব।’

তিনি জানান, বর্তমানে আমাদের দেশে চার লক্ষ টন পাঙ্গাস ও তিন লক্ষ টন তেলাপিয়া উৎপাদন হচ্ছে। প্রজাতি দুটির সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে সুস্বাদু ও পুষ্টিমান ঠিক রেখে তা আমরা বিদেশে রপ্তানী করার পাশাপশি দেশেই চাহিদা সৃষ্টি করতে পারি। চিংড়ীর পরেই প্রজাতি দুটির বিদেশে রপ্তানীর জন্য অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় বিষয়টি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি প্যাকেজেই ইতোমধ্যে বেশকিছু আশাব্যঞ্জক ফলাফল পাওয়া গেছে যা পাঙ্গাস ও তিলাপিয়া মাছ চাষ, মাছ বিপনণ ও রপ্তানীতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। আঞ্চলিক উৎপাদন ও খামারের ঘনত্ব, মাছের উৎপাদনশীলতা ও মুনাফাকে প্রভাবিত করে। খাবারের ও পানির গুণাগুন, বিশেষায়িত উৎপাদন উপকরণে মাছের গুণাবলী, দাম ও চাহিদার ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।

উল্লেখ্য ডেনিস ইন্টারন্যাশন্যাল ডেভেলোপমেন্ট এজেন্সির (ড্যানিডা) অর্থায়নে বাংলাদেশে পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া মাছের আধুনিকায়নের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদী প্রকল্পের অংশ এটি।

এর পূর্বে এ বিষয়ে আরো দুটি কর্মশালা আয়োজন করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ১২জন শিক্ষার্থীকে স্নাতকত্তোর ও ৬ শিক্ষার্থীকে পিএইডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়।