ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ভারতের কেরালায় ‘বারুদ ভরা’ আনারস খাইয়ে অন্তঃসত্ত্বা হাতিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।

জানা যায়, এক অন্তঃসত্ত্বা হাতি দলছুট হয়ে ঢুকে পড়েছিল লোকালয়ে। খাবার খুঁজছিল সে। তখন তাকে শায়েস্তা করতে একটি আনারসে বারুদ ভরে টোপ দেওয়া হয় হাতিটিকে। না বুঝেই হাতিটি ওই আনারস খেতে শুরু করে। তখনই বিকট শব্দে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে ঝলসে যায় হাতিটির মুখ। সেখানে মারা যায় অবুঝ হাতিটি।

এ ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। গতকাল বুধবার হাতিটির ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন জানা গেছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, আনারসের মধ্যে পটকা জাতীয় বিস্ফোরক ঢুকিয়ে বন্য হাতিটিকে খেতে দেওয়া হয়। এর পরপরই হাতিটির মুখের মধ্যেই বিকট শব্দে পটকাটি বিস্ফোরিত হয়। মর্মান্তিক ভাবে মারা যায় হাতিটি।

উত্তর কেরালার মালাপ্পুরম বন বিভাগের এক কর্মকর্তা ঘটনার বিশদ বর্ণনা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিসহ পোস্ট করার পর তা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। মোহন কৃষ্ণন নামের ওই কর্মকর্তার পোস্ট থেকে জানা যায়, হাতিটি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে কাছের গ্রামে উপস্থিত হয় খাবারের সন্ধানে। সে পথ দিয়ে হাঁটার সময় তাকে আনারস খেতে দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা।

তিনি লেখেন, ‘হাতিটি মানুষকে বিশ্বাস করেছিল। আনারসটি খাওয়ার পরে যখন তার মুখের মধ্যে সেটিতে বিস্ফোরণ হল ও নিশ্চয়ই শিউরে উঠেছিল। নিজেকে নিয়ে ভেবে নয়, বরং ওর শরীরে বেড়ে ওঠা প্রাণ, যে আরও ১৮ থেকে ২০ মাস পরে ভূমিষ্ঠ হতো তাকে নিয়ে।’

বিস্ফোরণের পর মুহূর্তে হাতিটির সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা করে ওই কর্মকর্তা বলেন, বিস্ফোরণটি এত ব্যাপক ছিল যে, হাতিটির জিভ ও মুখ ভয়ঙ্কর ভাবে চোটপ্রাপ্ত হয়। হাতিটি যন্ত্রণা ও খিদেয় হাতিটি গ্রামের পথে ছুটতে থাকে। কিন্তু এই চরম অস্বস্তির মধ্যেও সে কোনও বাড়ি ভাঙেনি। কাউকে আক্রমণও করেনি। পরে যন্ত্রণার উপশম পেতে সে স্থানীয় ভেলিয়ার নদীতে নেমে যায় পানি খেতে।

অন্তত ২০ দিন আগে এ ঘটনা ঘটলেও ভারতের বনদফতর জানতে পারে গত ২৫ মে। খবর পেয়ে হাতিটিকে পানি থেকে উদ্ধার করতে আরও দুটি হাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় বন দফতর। কিন্তু সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি হাতিটি। এরপর ২৭ মে বিকেল ৪টার দিকে হাতিটি মারা যায়।

পরে জঙ্গলের মধ্যেই হাতিটিকে সমাধিস্থ করা হয়। ‘বারুদ ভরা’ আনারস খাইয়ে অন্তঃসত্ত্বা হাতিকে হত্যা শিরোনামে সংবাদের তথ্য জিনিউজবাংলা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।