মৎস্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশে মাছে নতুন রেকর্ড, উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনের বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ এবার বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। এক নম্বরে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বৈশ্বিক প্রতিবেদন ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার–২০২০’ এর তথ্যমতে, ২০১৯ সালে বিশ্বে প্রায় ১৮ কোটি টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। এসব মাছের অর্ধেকেরও বেশি অভ্যন্তরীণ উৎসের বা স্বাদু পানির মাছ। আর বাকি মাছ সামুদ্রিক।

এক নম্বরে থাকা ইন্দোনেশিয়ায় মাছ উৎপাদন বাড়ার হার ১২ শতাংশ, আর বাংলাদেশে হার ৯ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে বিশ্বে এ হার প্রায় ৫ শতাংশ। এর আগে বাংলাদেশ বিশ্বে মাছ উৎপাদনে তৃতীয় ছিল, উৎপাদন বাড়ার হারে দ্বিতীয় হয়েছে। কৃতিত্ব ইলিশের আর দেশি মাছ চাষের।

আরোও পড়ুন: রাজশাহীতে দু-দিনে মাছের ক্ষতি ১৪ কোটি টাকার বেশি

২০১৯ সালে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালেই স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এক লাফে পঞ্চম থেকে তৃতীয় স্থানে উঠেছিল। এবার প্রথম ও দ্বিতীয় হয়েছে যথাক্রমে চীন ও ভারত।

চাষের মাছে বাংলাদেশের অবস্থানটি চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের পরে। বিশ্বে মাছ চাষের হার বেড়েছে ৫২৭ শতাংশ আর মাছ খাওয়ার হার বেড়েছে ১২২ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাছের অভয়াশ্রম তৈরি, বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মৎস শিকার বন্ধ ও জলাশয়াদিতে মাছ অবমুক্তকরণে এ সফলতা এসেছে।

এছাড়া প্রদর্শনী আর প্রশিক্ষণ, ইনসেনটিভ দেওয়ার ফলে বেকারত্বের সংখ্যা যেমন কমে এসেছে, তেমনি পতিত পুকুর সংখ্যাও এখন শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ মৎস অধিদপ্তর বলছে, বাংলাদেশ বিশ্বে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে তৃতীয় ছিল। অতীতের রেকর্ড ভেঙে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে। এ সফলতা আসার বেশকিছু কারণ রয়েছে। মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে চলমান প্রকল্প, প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী, ইনসেনটিভ দেওয়াই মূল কারণ। এছাড়া মুক্ত জলাশয়, হাওর, বিলে মাছের পোনা অবমুক্ত করাতো আছেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মা ইলিশ রক্ষা, মুক্ত জলাশয়ে মাছ অবমুক্ত করা আর মাছের অভয়াশ্রম তৈরি করাতে বড় সাফল্য এসেছে। মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে চলমান প্রকল্প হাতে নেওয়ায় আগামীতে আরও ভালো অবস্থানে আসবে দেশ।

আজ ( ৪ সেপ্টেম্বও ২০২০) এ বিষয়ে মৎস অধিদপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (পরিকল্পনা ও জরিপ) মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা মা ইলিশ রক্ষা করতে অনেকটা সক্ষম হয়েছি। যার ফল হিসেবে বড় ইলিশ বাজারে আসছে। মাছ প্রজনন মৌসুমে ৬৫ দিন শিকার বন্ধ রাখা, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার মাধ্যমে মাছ রক্ষা করা হচ্ছে। জলাশয়ে ডালপালা দিয়ে মাছের আশ্রয় বানানো হচ্ছে। সেখানে মাছ ডিম দিচ্ছে, বর্ষায় তা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে।

এই কর্মকর্তা আরোও বলেন, এখন মাছ চাষ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। আমাদের গবেষণায় বিলুপ্ত মাছ- টেংরা, পাবদা, গুলশা চাষে প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করছি। এতে এক দিকে বেকারত্ব কমছে, অন্যদিকে বেড়েছে মাছ উৎপাদন।

বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়ে দেশে রেকর্ড পরিমান মাছ উৎপাদন শিরোনামে সংবাদের তথ্য বাংলানিউজ থেকে নেওয়া হয়েছে।