অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ভারতে চিনি রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার সময় আরোও বাড়ানো হয়েছে ফলে বৈশ্বিকভাবেই বাড়তে পারে চিনির দাম। খুব শীঘ্রই বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ঠিক এই সময়ে ব্রাজিল থেকে ১২ হাজার ৫০০ টন চিনি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর ২০২২) দুপুরে সভা শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিসভা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, জেএমআই এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইম্পোর্টের সহযোগীতায় চিনি আমদানি করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অধীনস্ত সংস্থা টিসিবি।

আমদানির ক্রয় সম্পর্কিত তথ্যে জানান, প্রতি টন চিনির দাম ৫২৪ ডলার। মোট দাম পড়বে ৬৫ লাখ ৫২ হাজার ৬২৫ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৫ কোটি ৯৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩৩৭ টাকা।

ব্রিফিংয়ে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক ২০২২ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের (৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর) বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ১০টি লটে ৭৫ লাখ ৯৩ হাজার ৯১৮ কপি বইয়ের জন্য খরচ হবে ২৫ কোটি ৮৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪০ টাকা। আজ মোট ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

এদিকে ভারত সরকার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ চিনি উৎপাদনকারী ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেইন ট্রেডের (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চিনি রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর অথবা পরবর্তী নির্দেশনা পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। অন্যান্য শর্তাবলি অপরিবর্তিত থাকবে।

সর্বোচ্চ রফতানির পরও দেশের অভ্যন্তরে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত মে মাসে চিনি রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় নয়াদিল্লি, যা চলতি মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। ছয় বছরের মধ্যে এবারই প্রথম এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিল ভারত। এতে রফতানি কমে যায় এক কোটি টন।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

একলাফে চিনির কেজিতে বাড়লো ১৪ টাকা

বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে চিনি

বিশ্বের শীর্ষ চিনি উৎপাদক দেশ হিসেবে পরিণত হচ্ছে ভারত

চিনি ও পাম তেলের দাম বেঁধে দিলো সরকার

সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া ২০২১-২২ বিপণন বছরের মে মাস পর্যন্ত ভারতের চিনি রফতানি ৫৭ শতাংশ বেড়ে ৮৬ লাখ টনে গিয়ে দাঁড়ায়।

চলতি মাসের শুরুতে ভারতের সরকার ও শিল্প কর্মকর্তারা জানান, ব্রাজিলের পর দ্বিতীয় শীর্ষ রফতানিকারক দেশটি ২০২২ সালের রেকর্ড পরিমাণ আখ শস্য উৎপাদন করবে। ফলে রফতানি বাড়বে ৮০ লাখ টন।

গত মাসে ভারতে ২০২২-২৩ চিনি উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়েছে। এ মৌসুমে দেশটি ৩ কোটি ৬৫ লাখ টন চিনি উৎপাদন করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত মৌসুমের তুলনায় উৎপাদন ২ শতাংশ বাড়বে। ইন্ডিয়ান সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (ইসমা) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বর্তমানে ভারত বিশ্বের শীর্ষ চিনি উৎপাদক দেশ। এছাড়া রফতানিতে ব্রাজিলের পরই দ্বিতীয় শীর্ষে দেশটির অবস্থান। ২০২১-২২ মৌসুমে দেশটি ৩ কোটি ৫৮ লাখ টন চিনি উৎপাদন করেছে। সে হিসাবে এ মৌসুমে উৎপাদন বাড়বে সাত লাখ টন।

এ মৌসুমে দেশটির মিল মালিকরা ৪৫ লাখ চিনি ইথানলে রূপান্তর করবে এর বাইরে উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩ কোটি ৬৫ লাখ টনে। গত মৌসুমে মিলাররা ৩৪ লাখ টন চিনি ইথানল উৎপাদনে ব্যবহার করেছিল। ২০২২-২৩ মৌসুমে গ্যাসোলিনের সঙ্গে ১২ শতাংশ ইথানল মিশ্রণ করবে ভারত।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ