অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সাড়ে ৮৪ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৮৪ হাজার ৫৩৮ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

আগের অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ৭৪ হাজার ৩০৬ টন। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে আমদানি বেড়েছে ১০ হাজার ২৩২ টন। দেশের বাজারে অপ্রতুল সরবরাহ ও ব্যাপক চাহিদা থাকায় আমদানি ছিল ইতিবাচক।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছয় মাসে বাড়লেও বর্তমানে মসলা পণ্যটির আমদানি কিছুটা নিম্নমুখী। নতুন বছরের শুরুতে দেশীয় পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা কম। তবে আগামী মাস থেকে দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ কমতে পারে। তখন আবারো আমদানি বাড়বে।

হিলি স্থলবন্দরে যায়, নতুন মৌসুমের ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আমদানীকৃত এসব পেঁয়াজ বন্দরে পাইকারিতে কেজিপ্রতি ২৭-৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় খুচরা বাজারের বেশির ভাগ দোকানেই নেই ভারতীয় পেঁয়াজ। সে স্থান দখল করেছে দেশী পেঁয়াজ। প্রতি কেজি দেশীয় পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে দুয়েকটি দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজের দেখা মিললেও তার দাম দেশী পেঁয়াজের চেয়ে বেশি।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরো নিউজ পড়তে পারেন:

ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা কমে দেশীতে বাজার দখল

ভারতীয় জাতের কারণে ধরা দেশের পেঁয়াজচাষিরা

ভরা মৌসুমে ভারত থেকে ঢুকছে পেঁয়াজ, হু-হু করে কমছে দাম

পেঁয়াজের বাম্পার ফলনে কৃষকের মাথায় হাত

স্থানীয় ক্রেতা আশরাফুল ইসলাম বলেন, বাজারে দেশী পেঁয়াজের দামের তুলনায় ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেশি। যদিও দামের পার্থক্য খুব বেশি নয় কিন্তু স্বাদের বিচারে দেশী পেঁয়াজ এগিয়ে, পরিমাণেও কম লাগে। সে কারণে আমি দেশী পেঁয়াজ কিনছি।

হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, ‘আমদানীকৃত পেঁয়াজের চেয়ে দেশীয় পেঁয়াজের দাম কম থাকায় ক্রেতারা কেউই তেমন ভারতীয় পেঁয়াজ নিতে চাইছে না। যার কারণে আমরাও ভারতীয় পেঁয়াজ তেমন একটা দোকানে তুলছি না। কিছু হোটেলে ভারতীয় পেঁয়াজ চলে, তাদের জন্য দুয়েকটি দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজ তুলেছে, যেগুলো তারা বিক্রি করছে।’

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন বলেন, এলসি জটিলতার কারণে কিছুদিন আগে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ কমে গিয়েছিল। আসন্ন রমজান মাস ঘিরে সে জটিলতা অনেকটা কেটে গিয়েছে, ব্যাংকগুলো পেঁয়াজের জন্য এলসি দিচ্ছে।

তবে দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা কম। ব্যবসায়ীরাও সে অনুযায়ী তুলনামূলক কম আমদানি করছেন। কারণ বর্তমানে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের যে দাম রয়েছে, তাতে করে পেঁয়াজ আমদানি করে দেশের বাজারে প্রকারভেদে ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে। কিন্তু সে তুলনায় দেশী পেঁয়াজের দাম বেশ কম। সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে চাহিদা থাকায় কিছু পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে পরিমাণ আগের চেয়ে কম। আগে যেখানে বন্দর দিয়ে দিনে ৩০-৪০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হতো, বর্তমানে তা কমে পাঁচ-সাত ট্রাকে নেমে এসেছে। এতে সরকারের রাজস্ব যেমন কমেছে, তেমনি কমেছে বন্দর কর্তৃপক্ষের দৈনন্দিন আয় ও শ্রমিকদের উপার্জন।’

পেঁয়াজ আমদানিকারক তোজাম্মেল হোসেন বলেন, এ অবস্থা পুরো জানুয়ারিতেই থাকবে। এর পরে বাজারে দেশী পেঁয়াজের সররবাহ কমতে শুরু করবে। তখন পেঁয়াজের দাম যেমন বাড়বে তেমনি আমদানীকৃত ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদাও বাড়বে। ফলে ফেব্রুয়ারি থেকে আবারো বন্দর দিয়ে বাড়তি পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ