অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে গম আমদানি শুরু হয়েছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে আমদানি কমেছে পণ্যাটির। তথ্য বলছে ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় কৃষিপণ্যটির আমদানি কমেছে অন্তত নয়-দশগুণ। ব্যবসায়ী ও মিলাররা বলছেন, দেশীয় বাজারে চাহিদা না থাকায় গম আমদানি কমেছে।

ভোমরা শুল্কস্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে জানা গিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৩ হাজার ৮২৪ টন গম আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে জুলাইয়ে ১১ হাজার ৫৯১ টন এবং আগস্টে ২ হাজার ২৩৩ টন। যার মূল্য ৪৪ কোটি ৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে গম আমদানি হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২৫৭ টন। যার মূল্য ২৭৩ কোটি ৭ লাখ টাকা, যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৯-১০ গুণ বেশি। ফলে গত দুই মাসে এ বন্দর দিয়ে গম আমদানি প্রায় ১০ গুণ কমেছে।

ভোমরা বন্দরের আরো এক গম আমদানিকারক মো. আকতার হোসেন জানান, গত অর্থবছরের এ সময় সপ্তাহে ৫০-৬০ ট্রাক গম আমদানি হয়েছে। যেখানে চলতি অর্থবছর সপ্তাহে চার-পাঁচ ট্রাক গম আমদানি হচ্ছে। বাজারে চাহিদা না থাকায় পণ্যটির আমদানি কমেছে।

পড়তে পারেন: সংকট কাটাতে রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম আমদানি

হারু ঘোষ নামে ভোমরা বন্দরের এক গম আমদানিকারক জানান, অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরে গম আমদানি কমেছে আশঙ্কাজনকভাবে। গত অর্থবছরে তিনি প্রতি মাসে ২৫০-৩০০ ট্রাক গম আমদানি করেছেন। সেখানে চলতি অর্থবছরে তার প্রতিষ্ঠান মাসে ৪০-৫০ ট্রাক গম আমদানি করেছে। দেশীয় বাজারে গমের চাহিদা কমে যাওয়ায় আমদানি কমে গিয়েছে।

ভোমরা শুল্কস্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার নেয়ামুল হাসান জানান, গত অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে গম আমদানি কমেছে কয়েক গুণ। তবে কৃষিপণ্যটি আমদানি করলে সরকারের কোনো রাজস্ব আসে না। উল্লেখ্য, কৃষিজাত পণ্য হিসেবে এটি শুল্কমুক্ত।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুল ইসলাম জানান, গত মৌসুমে সাতক্ষীরায় ৮০০ হেক্টর জমিতে আড়াই হাজার টন গম উৎপাদন হয়েছে। এ জেলার কৃষকরা গম-ভুট্টা চাষে ততটা আগ্রহী নন।

 এর আগে সরকার জানিয়েছে আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারত থেকে মোট ৪৫টি ট্রাক এক হাজার টন গম আনবে। এরপর প্রথম চালানে ৬৭টি ট্রাকে ১ হাজার ৩২০ টন গম দেশে আসে। পরে চলতি বছরের মে মাসে আরও দেড় লাখ টন গম বন্দরে আসে।

বাংলাদেশের এগ্রোভেট লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি ভারতের ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে আড়াই হাজার টন গম আমদানির চুক্তি করেছে। প্রতি টন গম আমদানি করা হচ্ছে ৩৭০ ডলারে। মেসার্স খলিফা এন্টারপ্রাইজ আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা গম শুল্ক ক্লিয়ারিং করছে।

পড়তে পারেন: গমের কেজিতে বাড়লো ৮ টাকা

ভারত সরকার গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর গত ৩০ মে থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে কোনো চালান দেশে প্রবেশ করেনি। এ কারণে নিষেধাজ্ঞার আগে আমদানি লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলা ১৪ হাজার টনের বেশি গম আটকে গেছে।

পরে ভারত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ভারী বর্ষণ ও বন্যার কারণে আগরতলা ও ত্রিপুরা রাজ্যের মধ্যে সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তখন গমের ট্রাকগুলো আগরতলায় পৌঁছাতে পারেনি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ