ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: আমাদের দেশে মসুর কলাই অন্যতম প্রধান ডাল শস্য। ডাল জাতীয় ফসলের মধ্যে মসুর কলাই বাংলাদেশে ডাল ফসলের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। সঠিক পদ্ধতিতে মসুর ডালের  চাষ না করাই অনেক চাষি ফলন নিয়ে হতাশ হন।

তাই আসুন জেনে নিই মসুর ডাল চাষের সঠিক পদ্ধতি:

জমি ও মাটি নির্বাচন: সুনিষ্কাশিত বেলে দো-আঁশ মাটি মসুর চাষের জন্য উপযোগী।

জাত পরিচিতি:বারি মসুর-১, বারি মসুর-২, বারি মসুর-৩ এবং বারি মসুর-৪ উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা জাত নির্বাচন করা যেতে পারে।

জমি তৈরি: একক ফসল হিসেবে আবাদের ক্ষেত্রে জমিতে সুনিষ্কাশিত ও উপর্যুক্ত রস থাকলে ৩-৪ টি গভীর চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। মসুর আমন ধান কাটার পূর্বে রিলে ফসল হিসেবে আবাদ করা হলে চাষের প্রয়োজন হয়না।

বীজ বপন: ছিটিয়ে অথবা সারি করে বীজ বপন করা যায়। সারিতে বপনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সে.মি রাখতে হবে। বীজের হার ৩০-৩৫ কেজি/হেক্টর। ছিটিয়ে বপনের ক্ষেত্রে বীজের পরিমাণ সামান্য বেশি দিতে হবে। তবে বারি মসুর-৩ এর বেলায় হেক্টরপ্রতি ৩৫-৪০ কেজি বীজ ব্যবহার করতে হবে। কার্তিক মাসের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহ (অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ) পর্যন- মসুর বীজ বপন করা যায়।

আরও পড়ুন: মসুর ডালের অবিশ্বাস্য গুণ

সার ব্যবস্থাপনা: জমিতে শেষ চাষের সময় হেক্টরপ্রতি নিম্নরূপ সার ব্যবহার করতে হবে। সারের নাম সারের পরিমাণ কেজি/হেক্টর
ইউরিয়া ৪০-৫০
টিএসপি ৮০-৯০
এমওপি ৩০-৪০
অণুজীব সার সুপারিশ মত
সমুদয়: সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। যে জমিতে আগে মসুর চাষ করা হয় নাই সেখানে প্রতি কেজি বীজের জন্য ৯০ গ্রাম হারে অনুমোদিত অণুজীব সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। ইনোকুলাম ব্যবহার করলে সাধারণতঃ ইউরিয়া সার ব্যবহার করতে হয় না।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা: বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে নিড়ানি দ্বারা একবার আগাছা দমন করা প্রয়োজন। অতিবৃষ্টির ফলে জমিতে যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পানি বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

পরিচর্যা: জমিতে আগাছা থাকলে বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে নিড়ানী দ্বারা একবার আগাছা দমন করা প্রয়োজন। অতিবৃষ্টির ফলে জমিতে যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে মাটিতে রসের অভাবে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হলে গাছ গজানোর ৩০-৪০ দিনের মধ্যে একবার হালকা সেচ দিতে হবে।

 আরও পড়ুন: মসুরের মরিচা রোগের কারণ ও প্রতিকার

ফসল সংগ্রহ: বীজ বপনের ১১০-১১৫ দিন পর মসুর সংগ্রহ করা যায়। (মধ্য-ফাল্গুন থেকে মধ্য-চৈত্র (মার্চ) মাসে ফসল সংগ্রহ করা যায়)। বারি মসুর-৯ জাতটি স্বল্প জীবনকাল হওয়ায় ৮৫-৯০ দিন পর মসুর সংগ্রহ করা যায়।

মসুর ডাল চাষের সঠিক পদ্ধতি শিরোনামে লেখাটির তথ্য কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি