ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাত চলনবিলের ৯ উপজেলায় অন্তত ২০-২৫ হাজার পুকুরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেন শত শত চাষি। করোনার কারণে মাছ বিক্রি করতে না পেরে এ অঞ্চলের শত শত মৎস্যচাষি পুকুর ভরা মাছ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। রমজানেও বিক্রি নেই মাছ, বিপাকে চাষিরা শিরোনামে খবর প্রকাশ করে সমকাল।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, রমজানের বাজার ধরতে না পেরে মৎস্যচাষিরা পুকুরের মাছের জন্য অতিরিক্ত সময় ধরে খাদ্য, ওষুধসহ আনুষঙ্গিক খরচ জোগাতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতির সন্মুখীন হচ্ছেন।

মূলত অনেক মৎস্যচাষি রমজান মাস সামনে রেখে মাছের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বাজার ধরতে রমজানের প্রথম দিকে পুকুরে মাছ ধরতে নামেন। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে চলনবিলের মৎস্যচাষিরা রমজানের মাছের বাজার ধরতে পারেননি। ফলে অতিরিক্ত সময় পুকুরে মাছ রেখে তা পরিচর্চা করছেন। ফলে মাছের উৎপাদন ব্যয় ক্রমে বেড়েই চলছে।

চলনবিলের বৃহৎ মাছের আড়ত সিরাজগঞ্জের তাড়াশের মহিষলুটি ও উল্লাপাড়ার হাটিকুমরুল আড়তসহ কয়েকটি মাছের আড়ত স্বল্প পরিসরে খোলা থাকলেও বড় বড় মৎস্যচাষির মাছ সেখানে আসছে না। কারণ ওইসব আড়ত থেকে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, টাঙ্গাইল এলাকার পাইকারি ক্রেতারা মাছ কিনে থাকেন। কিন্তু দেশব্যাপী করোনাকালীন ছুটির কারণে ওই বৃহৎ আড়তগুলোতে বড় বড় পাইকার না আসায় মৎস্যচাষিরা বিপাকে পড়ে মাছ ধরছেন না। এমনটাই জানালেন মহিষলুটির মাছের আড়তের আড়তদার সুজন ইসলাম।

আরোও পড়ুন:দেশে খাদ্যের অভাব হবে না, বরং খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকবে : খাদ্যমন্ত্রী

অন্যদিকে চলনবিলের কোহিত গ্রামের আদর্শ মৎস্যচাষি লুৎফর রহমান জানান, তার চারটি পুকুরে প্রায় ৮০-৯০ লাখ টাকার মাছ রয়েছে, যা প্রতি বছর রমজান মাসে পর্যায়ক্রমে বিক্রি করে থাকেন। গত বছর এ সময় একটি পাঁচ কেজি ওজনের রুই মাছ দুই হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে আড়তগুলো স্থবির হয়ে পড়ায় এলাকাভিত্তিক স্বল্প পরিমাণ মাছ বিক্রি হলেও দাম পাচ্ছেন না তারা।

এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হাসান মাহমুদুল হক বলেন, করোনার কারণে মাছের দাম কম। আড়তগুলোও কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। এ কারণে আমার উপজেলার মৎস্যচাষিরা বাধ্য হয়েই পুকুরে মাছ রেখে ব্যয় অব্যাহত রেখেছেন। এতে মৎস্যজীবীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমরা সহযোগিতার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিদের তালিকা করছি।