নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, মৎস্য খাতে ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক প্রণোদনা, ভর্তুকি দেয়া হবে। এ খাতে যারা বিনিয়োগ করছেন তাদেরকে স্বল্পসুদে ও সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হচ্ছে যেন তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে পারে।

মন্ত্রী আরোও বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ের একটা পুকুর আমরা ফেলে রাখতে দেবো না। মৎস্য সম্পদ আমরা সারাদেশে বিস্তৃত করবো।পুকুর খননের জন্য সাহায্য করা হবে, পুকুরে আধুনিক জাতের পোনা মাছ সরবরাহ করা হবে, পুকুরের মাছের খাবারের জন্য ভর্তুকি দেয়া হবে, কারিগরি সহায়তা দেয়া হবে’।

আজ শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর ২০২০) দুপুরে ময়মনসিংহ বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) অডিটোরিয়ামে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত কৈ, তেলাপিয়া এবং সাদা পাঙ্গাসের জার্মপ্লাজম মৎস্য অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ এবং সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ তৌফিকুল আরিফ ও মোঃ লিয়াকত আলীসহ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

আরোও পড়ুন: মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় স্থানে বাংলাদেশ

মন্ত্রী আরো বলেন, টেংরা, পাবদা, শিংসহ হারিয়ে যাওয়া যে সকল মাছ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, বিলুপ্তপ্রায় সেসব মাছ আমরা আবার ফিরিয়ে আনছি। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট। বাঙালির নিজস্ব প্রজাতির মাছ মানুষের দোরগোড়ায় ফিরিয়ে আনার সমস্ত প্রক্রিয়া আমরা সামনে নিয়ে আসছি।

মৎস্য খাতকে এমন একটি জায়গায় আমরা নিয়ে যাবো, যেখানে গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হবে, বেকার মানুষ উদ্যোক্তা হবে। দারিদ্র্য দূর হবে, পুষ্টির অভাব দূর হবে, খাদ্যের অভাব দূর হবে। অর্থাৎ এই খাতের ব্যবহারের পরিসর অনেক বড় হবে।

“বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ, আধুনিক, উন্নত সোনার বাংলাতে সত্যি সত্যি পরিণত করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে পরিণত হচ্ছে মৎস্য সম্পদ। এ খাতকে আমরা পরিকল্পিতভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।” যোগ করেন মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে মৎস্য খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেন মন্ত্রী।

মৎস্য খাতে ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক প্রণোদনা, ভর্তুকি দেয়া হবে শিরোনামে সংবাদের তথ্য এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ ইফতেখার হোসেন।

এদিন সকালে বিএফআরআই ক্যাম্পাসে দেশীয় মাছের লাইভ জীন ব্যাংক উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। পরে ইনস্টিটিউটের স্বাদু পানি কেন্দ্রে চলমান গবেষণা কার্যক্রম তথা মাছের জাত উন্নয়ন, বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণ ও চাষ, বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষ, অপ্রচলিত মৎস্য সম্পদ কুচিয়া ও মুক্তা চাষ, মহাশোল ও পাঙ্গাস মাছের প্রজনন ও চাষ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি।

এরপর বন্যাউত্তর পুনর্বাসনের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের মাঝে মাছের পোনা বিতরণ করেন তিনি। বিকেলে বিএফআরআই-এর গবেষণা অগ্রগতি উপস্থাপন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী।