মেহেদী হাসান, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি বছরের দফায় দফায় বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাজশাহীর সবজি চাষিরা। অন্যান্য ফসলের মতো পানিতে নিমজ্জিত হয়ে মরিচ গাছ মারা যাওয়ায় অতিরিক্ত দামে বিক্রি হতে থাকে কাঁচামরিচ। বর্তমানের এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে রাজশাহীতে সাড়ে ৮০০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে মরিচ।

বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে রাজশাহীর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাগমারা ও মোহনপুর উপজেলা। এ দুই উপজেলাসহ রাজশাহীর চার জেলায় রোপা আউশ, আমন, পাট, শাক-সবজি, মরিচ, পান ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়। বন্যায় এসব ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রভাব পড়ে বাজারে। সেইসাথে দাম বাড়তে থাকায় আলোচনায় আসে কাঁচামরিচ।

আবাদকৃত মরিচ গাছ মরে যাওয়ার ফলে পণ্যটির দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বর্তমানে মরিচের দামে নাজেহাল মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা দরে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য চলতি মৌসুমে জেলার ৮টি উপজেলা ও দুটি মেট্রো এলাকায় মোট ৮৫০ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্যমাত্রা থেকে উৎপাদন আশা করা হচ্ছে ১ হাজার ৭৪৩ টন শুকনা মরিচ। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজশাহী জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উদ্বৃত্ত ছিল ২ হাজার ২২ মেট্রিক টন। জেলায় গড়ে ৩.৭৫ শতাংশ হিসেবে মোট মরিচের চাহিদা ৪ হাজার ১৮৬ মেট্রিকটন। চলতি মৌসুমেও একই রকম উৎপাদন আশা করছেন কৃষি বিভাগ।

আরোও পড়ুন: রাজশাহীতে বন্যায় পান বরজের ক্ষতি ১১ কোটি ছাড়িয়ে

গোল মরিচে হঠাৎ ঢলে পড়া রোগ হলে যা করবেন

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার বাগমারা ও মোহনপুর উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারনে মরিচ গাছ পানির নিচে নিমজ্জিত হয়ে মরে গেছে। খুব অল্প কৃষক গ্রীষ্ম মৌসুমে উঁচু জমিতে মরিচ আবাদ করেছিলেন, তাদের মরিচ বর্তমানে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে চাহিদার তুলনায় উৎপাদিত মরিচের যোগান কম থাকায় এমন দাম বেড়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে শীত মৌসুমের আবাদ শুরু হবে। তবে, অন্যান্য বছরের তুলনায় ফসল আসতে একটু বেশি সময় লাগবে ।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মোছাঃ উম্মে ছালমা এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, শীত মৌসুমে রাজশাহী জেলার ৮টি উপজেলা ও দুটি মেট্রো এলাকায় মোট ৮৫০ হেক্টর জমি মরিচ আবাদের আওতায় আনা হয়েছে। যেখান থেকে উৎপাদন হবে ১ হাজার ৭৪৩ টন শুকনা মরিচ।

সবচেয়ে বেশি মরিচ চাষ করা হয় বাগমারা উপজেলায় ২৪০ হেক্টর। এছাড়া উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য গোদাগাড়ি উপজেলায় ১৯৫ হেক্টর জমি মরিচ আবাদের আওতায় আনা হয়েছে।

রাজশাহীতে সাড়ে ৮০০ হেক্টর জমির মধ্যে পবা উপজেলায় ৭০ হেক্টর, দূর্গাপুর উপজেলায় ৭৫ হেক্টর, মোহনপুর উপজেলায় ৪০ হেক্টর, চারঘাট উপজেলায় ২৫ হেক্টর, পুঠিয়া উপজেলায় ১০০ হেক্টর, বাঘা উপজেলায় ৮০ হেক্টর, সবচেয়ে কম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তানোর উপজেলায় ১০ হেক্টর। মেট্রো দুটি এলাকায় বোয়ালিয়া ১০ হেক্টর এবং মতিহার ৫ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ