ইউসুফ আলী সুমন, নওগাঁ প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: নওগাঁর রাণীনগরে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে অধিক লাভজনক লেবু চাষ। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লেবু অনেক উপকারী বলে বাজারে বৃদ্ধি পেয়েছে এর চাহিদা।

এদিকে এক ঘেয়েমী আবাদ থেকে কৃষকদের অধিক লাভজনক ফসল চাষের দিকে আগ্রহী করার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের অনুপ্রেরনায় ও সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলার কিছু চাষী বিভিন্ন জাতের লেবু চাষ শুরু করেছেন। প্রথম দিকে পরীক্ষামূলক লেবু চাষ হলেও বর্তমানে বড় পরিসরে বাণিজ্যিক ভাবে এর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরও পড়ুন: নওগাঁয় শিম চাষে স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, করোনা ভাইরাসের কারণে এই লেবুর চাহিদা অনেকগুন বেড়ে যাওয়াই এখন অনেক মানুষই অধিক ফলনশীল এই লেবু চাষের দিকে ঝুঁকছেন। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ রসালো লেবুর চাষ করে উপজেলার লেবু চাষীরা বর্তমানে অনেক লাভবান হচ্ছেন। তবে আগামী মৌসুমে লেবুর চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন রাণীনগর কৃষি বিভাগ।

অধিক ফলন পাওয়ার উপায় হিসেবে লেবু চাষীদের মাঝে কৃষি অফিস থেকে চায়না-৩ জাতের চারা সরবরাহ করা হয়েছে। এই জাতের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি, খরচ অনেক কম, বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হয় কম, পরিপক্ক লেবুতে অনেক রস পাওয়া যায় এবং কম সময়ের মধ্যে অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব।

উপজেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭ হেক্টর জমিতে চায়না-৩ জাতসহ বিভিন্ন জাতের লেবু চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুক’লে থাকায়, কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় আর চাষীদের নিবিড় পরিচর্যার কারণে লেবুর ফলন বিগত বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে। দাম বেশি এবং ঝামেলা মুক্ত ফসল হওয়ায় চাষীরা দিনদিন এই লেবু চাষের দিকে মনোযোগী হচ্ছেন।

কুজাইল গ্রামের লেবু চাষী রফিকুল ইসলাম জানান, আমি দুই বছর ধরে শাকসবজির পাশাপাশি কিছুটা লেবু চাষ করতাম। তাতে লাভবান হওয়ায় গত বছর চকমুনু মৌজায় ৬ বিঘা জমি লীজ নিয়ে লেবুর চাষ শুরু করেছি। বাজারে লেবুর চাহিদা বেশি থাকায় বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতিদিন আমার জমি থেকে প্রায় ৩ হাজার পিচ লেবু তুলে খুরচা ও পাইকারি দরে বিক্রি করছি।

এতে আমার অন্যান্য ফসলের তুলনায় লেবু বিক্রি করে অধিক লাভবান হয়েছি। এখন পর্যন্ত বাগানে যে পরিমাণ ফল আছে প্রতিদিন প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার পিচ লেবু বিক্রি করছি। আগামী মৌসুমে বাগানের পরিসর বৃদ্ধি করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

আরও পড়ুন: নওগাঁয় মুজিববর্ষে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির চারা বিতরণ দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার.কমকে জানান, রফিকুল ইসলাম খুব ভালো লেবু চাষী। তার লেবুর বাগান দেখলে মন জুড়ে যায়। ফলন ভালো হওয়ার কারণে সে চলতি মৌসুমে লেবু বিক্রি করে অনেক লাভবান হয়েছেন। তার লেবু চাষ দেখে প্রতিবেশিরাও লেবু চাষের দিকে আগ্রহী হচ্ছেন। তাই অন্যান্য চাষীদের প্রতি পরামর্শ এই যে অন্য ফসলের পাশাপাশি লেবুও চাষ করতে পারেন। কারণ একই জমিতে লেবুর গাছের ফাঁকে অন্য মৌসুম ভিত্তিক ফসলও চাষ করা সম্ভব। তাই আশা করছি আগামী মৌসুমে লেবু চাষের পরিধি আরো বৃদ্ধি পাবে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি